সাড়ে ৪শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এলএনজি বিদ্যুৎ কেন্দ্র
শাহীন চৌধুরী: দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাস সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এলএনজি আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর প্রথম উদ্যোগ হিসেবে প্রায় সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি এলএনজি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্প সফল হলে পর্যায়ক্রমে এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে জোর দেয়া হবে। এক পর্যায়ে দেশের মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৫০ ভাগই এলএনজির মাধ্যমে উৎপাদন করা হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
সূত্রমতে, কক্সবাজার জেলার মহেশখালিতে কম্বাইন্ড সাইকেল এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৬শ’ মেগাওয়াট। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই ভূমি অধিগ্রহণ, উন্নয়ন এবং ফিজিবিলিটি পরীক্ষা- নিরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছর জুলাই মাস থেকে প্রাথমিক এসব কাজ শুরু হয়েছে। এরপরই বিদি্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
জানা গেছে, জাপানের মিতসুই কোম্পানি এলএনজি ভিত্তিক এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা করবে। এ প্রকল্পের জন্য প্রায় ১৩ একর জমি অধিগ্রহন করা হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে এলএনজি সরবরাহের জন্য সাড়ে আট কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণ করবে সরকার। এটি হবে রিভার ক্রািসং পাইপ লাইন।
২০২১ সালের মধ্যে সরকার সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সেই কারণেই দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোরও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্রহন ওই প্রক্রিয়ারই অংশ। সূত্র মতে, এলএনজি ছাড়াও কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়ানো হবে। তবে জলবায়ূ পরিবর্তন নিয়ে সারা বিশ্বে সচেনতার কথা বিবেচনা করেই এলএনজিকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। এজন্য আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশে উৎপাদিত মোট বিদ্যুতের ৮ শতাংশই এলএনজি নির্ভর করা হবে। একইভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে ২৭ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পন রয়েছে।
এলএনজি নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক জ্বলানি উপদেষ্টা এবং জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড: এম তামিম এই প্রতিবেদককে বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু আমদানি নির্ভর এলএনজির পাশাপাশি আমাদের অফসর ব্লকগুলোতে গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিতে হবে। সেখানে গ্যাস প্রাপ্তির ব্যাপক সম্ভানা থাকার পরও সরকার কেন কালক্ষেপন করছে তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। অনসর গ্যাস ব্লকেও আরও অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।