বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্ব^র্ণ নিয়ে অনিয়মের খবর পুরোপুরি সত্য নয়: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
সোহেল রহমান: অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা স্বর্ণ নিয়ে অনিয়মের খবর মিডিয়ায় যেভাবে প্রকাশিত হয়েছেÑ সেটা পুরোপুরি সত্য নয়। কোন স্বর্ণ বাইরে যায় নাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা স্বর্ণ নিয়ে অনিয়মের বিষয়ে যোগাযোগের ঘাটতিতেই এই সঙ্কট। তবে আমরা বিষয়টি মোটেও ছোট করে দেখছি না। পর্যালোচনা করে কারো বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ-সংক্রান্ত একটি কমিটিও গঠন করা হবে।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা স্বর্ণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে গতকাল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে অর্থ প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শহিদুল ইসলাম, এনবিআরের সদস্য কালিপদ হালদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত: গত মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে ভুতুড়ে কান্ড’ শিরোনামে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত রিজার্ভ স্বর্ণের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের দেওয়া সোনা জমা রাখার সময় এর পরিমাণ ৪০ শতাংশই ছিল। কিন্তু ইংরেজি-বাংলার হেরফেরে সেটা ৮০ শতাংশ লিখে ভুলবশত: নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ৮০ এবং ৪০-এ ক্লারিক্যাল মিস্টেক হয়েছে।’ তিনি বলেন, ছয় স্তরের নিরাপত্তা আছে, কোন স্বর্ণ বাইরে যায় নাই। জনগণের সম্পদ রক্ষায় সরকার বদ্ধ পরিকর। তাই টোটাল নিরাপত্তা সিস্টেমটা পর্যালোচনা করে ঢেলে সাজানো হবে। এ ক্ষেত্রে অন্য কোন সংস্থা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাজ করলে কিছু ধারণাগত তফাত হতে পারে। সব সোনা ঠিক আছে। ৪০ ক্যারেট আর ৮০ ক্যারেট নিয়ে ভুল হতেই পারে। আগে সোনা মাপা হতো মান্ধাতার আমলের নিক্তি দিয়ে। এখন আধুনিক পরিমাপক দিয়ে মাপা হয়। তাতে দশমিক ০০০০১ কম-বেশি হয়। অর্থমন্ত্রী দেশে ফিরলে বিষয়টি সম্ভাব্য সব উপায়ে খতিয়ে দেখা হবে।’
‘গত দুই বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এনবিআর-এর চিঠি চালাচালি হওয়া সত্ত্বেও এ ধরণের ঘটনা কেন ঘটল’Ñ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমলাতান্ত্রিক গাফিলতি আছে, লিখিত চিঠির জবাব এসেছে দেড় মাস পর। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআর দুই প্রতিষ্ঠানেরই গাফিলতি রয়েছে।’ ‘কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে কি না’Ñ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোন্ কমিটি হবেÑ সেটা এখনি বলছি না। তবে তদন্ত বা পর্যালোচনা কমিটিÑ যেকোনো ফরমেটেই হোক, একটা কমিটি হবে।’