রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না মিয়ানমার
আশিক রহমান: মিয়ানমার রোহিঙ্গা সমস্যার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছে, কিন্তু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হুমায়ুন কবির। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সমস্যাটার আশেপাশে মিয়ানমার ঘোরাঘুরি করছে, কিন্তু সমস্যা মিটানো বা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না। তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা-নিরাপত্তা এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে খুব দ্রুত সময়ে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে মিয়ানমারের একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আসা উচিত।
এক প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন কবির বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে খুব সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটা ভালো কথা বলেছেন যে, মিয়ানমার চুক্তি করে কিন্তু বাস্তবায়ন করে না। আমার ধারণা, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণেও কিছুটা জটিলতা রয়েছে। যে কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আটকে আছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হলে তো তাদের নাগরিক অধিকার, নিরাপত্তা, সম্মান, টেকসই জীবনপ্রবাহ সুনিশ্চিত করতে হবে। মিয়ানমার তো তার কিছুই করছে না। না করলে রোহিঙ্গারা সেখানে ফেরত যাবে কী করে? রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে মিয়ানমারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বলিষ্ঠ বা সাহসী নয়।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসনে আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে চীন-রাশিয়া-ভারতের মতো দেশগুলো মিয়ানমারের উপর চাপ অব্যাহত রাখে। আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও (আইসিসি) আরেকটু নাড়াচাড়া করে দেখতে হবে, মিয়ানমারের মানবতাবিরোধী অপরাধে যারা অভিযুক্ত, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা যায় কিনা। যদি সেটা সম্ভব হয় তাহলে আমার ধারণা, মিয়ানমারের উপর চাপ আরও বাড়বে। যদি বাস্তব করা সম্ভব হয় হয়তো তাদের বর্তমান আচরণ পরিবর্তন করতে পারে। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। সেই চেষ্টা আমাদের বজায় রাখতে হবে। এটাকে আরেকটু শক্তিশালী করতে হবে বলেও মনে করেন এই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক।