পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলো নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত
ইমরুল শাহেদ, আনন্দ মোস্তফা ও আবদুর রাজ্জাক: পাকিস্তানের একটি গোয়েন্দা সংস্থা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্বাচনকালীন চার প্রদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কতটা হুমকির পড়তে পারে তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলুচিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে এবং এমকিউএম-ল-ন করাচির নির্বাচনে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
পাকিস্তানের ডন অনলাইনের নির্বাচনি লাইভ ব্লগে বলা হয়েছে, পাঞ্জাব নির্বাচনে ধর্মীয় উগ্রবাদীরা নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। খাইবার পাকতুন খোয়ায় রাজনৈতিক নেতারা আক্রান্ত হতে পারেন। কারণ সেখানে পাকতুন তাহাফুজ ম্যুভমেন্টের (পিটিএম) কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারাও হুমকি হয়ে উঠতে পারেন।
ডনের অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলুচিস্তান এবং পাকতুনখোয়াতে যেভাবে ধারাবাহিক বোমা হামলা শুরু হয়েছে তাতে সেখানে আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি) জনসভা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) দলটির চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভূট্টো-জারদারির জন্য করাচিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দাবি করেছে।
লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিলওয়াল ভুট্টো বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন ও অনেক বিরোধী দল নিষিদ্ধ ঘোষিত দলগুলোর সাথে জোট করছে। রাজনীতিতে উগ্রপন্থার কোন স্থান নেই। চরম পন্থা বন্ধ করতে আমাদের এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আর বিশ্বকে আমরা আসলে কি দিতে চাচ্ছি তা পরিস্কার করতে হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, পিপিপিকে হারাতে কিছু দল নিষিদ্ধ গ্রুপগুলোর সঙ্গে জোট করছে। ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ (পিটিআই) ও ‘পাকিস্তান মুলিম লীগ-নওয়াজ’ (পিএমএল-এন) এর নাম সরাসরি উল্লেখ করেন তিনি।
অন্যদিকে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাবাহিনীর ইলেকশান্স সাপোর্ট সেন্টার সফর করেছেন। আইএসপিআরে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুষ্ঠানের জন্য ইসিপিকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়গুলো নিয়ে সেনাপ্রধানকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।’
আইএসপিআর জানিয়েছে, জেনারেল কমর বলেছেন সেনাবাহিনী কঠোরভাবে সীমার মধ্যে থেকে এবং ইসিপির আচরণবিধি মেনেই তাদেরকে সাহায্য করবে।’
চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তান। আগামী ২৫ জুলাই অনুষ্ঠেয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমনওয়েলথ’র দু’টি পর্যবেক্ষক গ্রুপকে শুক্রবার স্বাগত জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষক গ্রুপের প্রধান আব্দুলসালামি আবু বকর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাত করেন এবং দেশটিতে আসন্ন সাধারণ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেন। কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষক গ্রুপের ২৪ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবু বকর। পাকিস্তানে ২০০২ ও ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনেও বিভিন্ন পর্যবেক্ষক গ্রুপ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কাজ করেছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আবু বকর বলেছেন যে তিনি একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনি প্রক্রিয়া দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন। এ সময় তিনি সাধারণ নির্বাচনের দেশটির প্রস্তুতি বিষয়ে তার ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেন।