বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি: ১ লাখ ৪২ হাজার টন কয়লা গায়েব
স্বপ্না চক্রবর্তী: দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে উত্তোলন করে রাখা ২২৭ কোটি টাকা মূল্যের ১ লাখ ৪২ হাজার টন কয়লা গায়েব হয়ে গেছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে প্রকল্পের ৪ কর্মকর্তাকে আনা হয়েছে সাজার আওতায়।
কয়লা খনি কোম্পানিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা যেখানে স্তূপ করে রাখা হয় সেখানে ১ লাখ ৪২ হাজার টন কয়লা মজুদ থাকার কথা ছিল। অথচ সেখানে এখন এক টন কয়লাও নেই। প্রতি টন কয়লার বর্তমান বাজার মূল্য ১৬ হাজার টাকা। সেই হিসাবে ২২৭ কোটি টাকার কয়লার কোনো হদিস নেই। এই ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমেদ ও কোম্পানি সেক্রেটারি ও মহাব্যবস্থাপক আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে অন্য জায়গায়। আর সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) মো. নূর-উজ-জামান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে। দায়িত্বে অবহেলার কারণেই এই চারজনের বিরুদ্ধে এরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিএমসিএল-এর এক কর্মকর্তা।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, হাবিব উদ্দিন আহমদকে অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) করে পেট্রোবাংলায় ফিরিয়ে আনা হলেও আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে তাৎক্ষণিক বদলি (স্ট্যান্ড রিলিজ) করে সিরাজগঞ্জে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানিতে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে চালাতে প্রতিদিন সাড়ে চার হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হয়। কিন্তু সাময়িক ভাবে উত্তোলন বন্ধ থাকায় ও মজুদ ফুরিয়ে আসায় ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটিতে এখন আংশিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে। কয়লা সংকটে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অপর ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটিও পূর্ণ শক্তিতে চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
বিষয়টিকে দেশের জ্বালানি খাতের অশনিসংকেত হিসেবে বলে মন্তব্য করছেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম। তিনি বলেন, কয়লা চুরির মতো ঘটনায় এর সাথে সংশ্লিষ্টরাই জড়িত রয়েছে। সরকার যদি বিরুদ্ধে এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে একটা সময় এটি ভয়ংকর আকার ধারণ করবে। সম্পাদনা: আনিস রহমান