৩ বিশ্ববিদ্যালয় ২ দিনের বন্ধ ঘোষণা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ
সুশান্ত সাহা: আন্দোলনের নবম দিনে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের তৎপরতা ঠেকাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ মারমুখী অবস্থান নিলে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দফায় দফায় কাঁদুনে গ্যাস শেল ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিক ও শিক্ষাথীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে।
গতকাল সোমবার রামপুরা, ভাটারা, বাড্ডা ও শাহবাগ এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে সংশ্লিষ্ট এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রামপুরা ও মেরুল বাড্ডা এলাকায় ইস্টওয়েস্ট ও ভাটারা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিসহ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে থেমে থেমে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ৬ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
জানা গেছে, গতকাল বসুন্ধরা এলাকায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতের মধ্যে ভাটারা থানার ওসি কামরুজ্জামান, পরিদর্শক তদন্ত মাহফুজুর রহমান মিয়া, গুলশান থানার এসআই সাহানুর রয়েছেন। এ ঘটনায় ১০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষের পর বসুন্ধরা এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিলো। মেরুল বাড্ডা ও রামপুরা টিভি গেট এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে অবরোধ করলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পলিশ ও ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
অপরদিকে, রোববার রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল সকাল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। শাহবাগ এলাকায় পুলিশ আগে থেকেই অবস্থান নেয়। বেলা ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে ৩-৪শ’ শিক্ষার্থী একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগোতে থাকলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে ও জলকামান দিয়ে পানি ছোড়ে। পরে লাঠিপেটা করে করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে পুলিশ আটক করেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী এবং এক পুলিশ সদস্য আহতের খবর পাওয়া গেছে। আন্দোলনকারীদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগের ছাত্রী সামান্তা শারমিন বলেন, পুলিশের হামলায় আন্দোলনকারী পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
ডিএমপি রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার বলেন, কিছু শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে আসছিল। পুলিশ শৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের বাধা দেয়। কিন্তু তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন আর কয়জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন মিম ও করিম নামে দুই শিক্ষার্থী। ওই দুর্ঘটনায় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী আহতও হন। সম্পাদনা: আনিস রহমান