অগ্রীম ট্রেনের টিকিট পেতে মানুষের ভিড়
শোভন দত্ত: প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখো মানুষের ‘যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। কাক্সিক্ষত ট্রেনের টিকিট পেতে গভীর রাত পরদিন সকাল পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। প্রতিটি লাইনের শুরু থাকলেও শেষ কোথায় তার কোনো হদিস মিলছে না। কোথাও তিল পরিমাণ জায়গা ফাঁকা নেই দাঁড়ানোর মতো। অগ্রিম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার সকালে কমলাপুর স্টেশনে এমন চিত্র দেখা গেছে। সকালে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার দেওয়া হচ্ছে আগামী ১৮ আগস্টের টিকিট। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় টিকিট বিক্রি। স্টেশনের ২৬টি কাউন্টারের মধ্যে দুটি কাউন্টার নারীদের জন্য সংরক্ষিত। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই মানুষের দীর্ঘ লাইন। দিন যত বাড়ছে টিকিট প্রত্যাশীদের সারিও তত দীর্ঘ হচ্ছে।
রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিটের জন্য বুধবার ১টায় লাইনে দাঁড়ান ইমরান আলী। তিনি সকাল সাড়ে ৯টায় চারটি টিকিট পেয়েছেন। কাক্সিক্ষত টিকিট হাতে পেয়ে মুচকি হেসে কাউন্টার ত্যাগ করেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘অনেক কষ্ট হয়েছে। টিকিট পেয়েছি। অন্তত বাড়ি যেতে পারবো।’
চট্টগ্রামের প্রভাতি এক্সপ্রেসের লাইনে দাঁড়ানো ছিলেন সুমাইয়া আক্তার। তিনি বলেন, ‘সকাল এসে দাঁড়িয়েছি। জানি না কখন যে টিকিট পাই। এখনও সামনে অনেক মানুষ।’
কমলাপুরে ট্রেনের টিকিট পেতে মানুষের ভিড়
এদিকে ট্রেনে অগ্রিম টিকিট বিক্রির সার্বিক বিষয় নিয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকাল ৮টা ২৬টি কাউন্টারে আগামী ১৮ আগস্টের টিকিট বিক্রি হয়েছে। মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন। যাত্রীদের অনেক ভিড়। যদিও আমাদের সম্পদ সীমিত। এরমধ্যেই আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে যেন কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছেন।’
প্রতিবারের মতো এবারও ১০ দিন আগে শুরু হয়েছে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি। শুক্রবার বিক্রি হবে ১৯ আগস্টের টিকিট। এভাবে আগামী ১১ ও ১২ আগস্ট পর্যায়ক্রমে টিকিট মিলবে ২০ এবং ২১ আগস্টের। এই দিনগুলোতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টেশন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টা টিকিট বিক্রি হবে।
জানা গেছে, বরাবরের মতো এবারও মোট টিকিটের ৬৫ শতাংশ দেওয়া হচ্ছে কাউন্টার থেকে। বাকি ৩৫ শতাংশের ২৫ শতাংশ অনলাইন ও মোবাইলে। ৫ শতাংশ ভিআইপি ছাড়াও রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫ শতাংশ। একজন যাত্রীকে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট দেওয়া হবে এবং বিক্রীত টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না।