ঈদের সময় ৮ দিন চালু থাকবে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র
শাহীন চৌধুরী: আলোচিত বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি ইউনিট ঈদের আগেই চালু করা হচ্ছে। ঈদের ছুটির অগে ও পরে মিলে মাত্র ৮ দিন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রাখা হবে। ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এই ২টি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৪০০ মেগাওয়াট। নিয়মিত সার্ভিসিং-এ থাকা ১২৫ মেগাওয়াট অপর ইউনিট চালু করা সম্ভব হবে না। ঈদের সময় উত্তরাঞ্চলের মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতেই মজুত কয়লা দিয়েই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পিডিবি’র একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মুখে স্থাপিত দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়। উত্তরাঞ্চলের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ক্ষমতা নেই জাতীয় গ্রিডের। তাই লোড ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করতো এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। গুরুত্বপূর্ণ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করার লক্ষ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে অল্প অল্প করে পাওয়া কয়লা মজুদ করা হচ্ছে। ঈদের সময় যাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রেখে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া যায় এটাই মূল লক্ষ্য।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে পিডিবি। উত্তরের ৮ জেলায় ব্যাপক লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তবে ঈদের সময় লোডশেডিংমুক্ত করতে চায় বিদ্যুৎ বিভাগ। পরবর্তীতে আমদানি করা কয়লা দিয়ে পুরোদমে চালু করা হবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
২০১৭ সাল থেকে বড় পুকুরিয়ার কয়লা খনির ২০১০ নম্বর ফেসে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। প্রায় বছরখানেক ভূগর্ভের এই ফেস থেকে প্রায় ৫ লাখ ৮৫ হাজার টন কয়লা উত্তোলন করা হয়। গত জুন মাসের মাঝামাঝিতে ২০১০ নম্বর ফেসে কয়লার মজুদ শেষ হওয়ায় বর্তমানে কয়লাখনিতে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। নতুন ভাবে ১৩১৪ নম্বর ফেসে উত্তোলনের জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন স্তর থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য খনি অভ্যন্তরে টানেল নির্মাণের কাজ চলছে। সেই টানেল তৈরি করতে গিয়ে কিছু কয়লা পাওয়া যাচ্ছে যা জমিয়ে রাখা হচ্ছে বলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াটের ইউনিটটি চালু রাখতে হলে দৈনিক ১২শ টন ও ২৭৫ মেগাওয়াটের ইউনিটে ২৮শ টন কয়লার প্রয়োজন পড়ে। অন্যদিকে ঈদের ছুটির সঙ্গে আগে-পিছে মিলে ৮ দিনের টার্গেট নেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ৩২ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এই সময়ের জন্যই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট চালু রাখা হবে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে তিন হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুদ রয়েছে। বাকি দিনগুলোতে যে কয়লা মজুত হবে তা দিয়ে দুটি ইউনিট চালু করা সম্ভব। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু যত দ্রুত সম্ভব কয়লা আমদানির কাজ শেষ করতে হবে।