কোরবানীর ঈদ সামনে, চড়া গরম মসলার বাজার
মাসুদ মিয়া: রাজধানীতে কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমলেও পেঁঁয়াজের ঝাঁজ কমছেনা। আর ক’দিন পরই ঈদুল আজহা বা কোরবানীর ঈদ। ঈদুল আজহারকে সামনে রেখে রাজধানীর বাজারগুলোতে মসলার দাম চড়া হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে দারুচিনি, এলাচের দাম বেশি বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছর কোরবানির ঈদের আগে বেড়ে যায় মসলার দাম। চিরাচরিত এই নিয়ম এবারও কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেটে মসলা আমদানির শুল্ক বাড়ানোর ফলে জিরা, গোলমরিচ, এলাচিসহ বেশ কিছু মসলার দাম বেড়েছে। তবে ঈদে বাড়তি চাহিদা থাকায় পাইকাররা বিভিন্ন অজুহাতে কৌশলে দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঈদের রান্নায় ব্যবহৃত মসলার পাশাপাশি অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় মসলা বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মসলার পাইকারি বাজারে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি জিরা ৩০ থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, দারুচিনি ২০ থেকে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা ও এলাচি কেজিতে ৫০ থেকে ২৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকা থেকে ১৮৫০ টাকায়। এছাড়া তেজপাতা ৯০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়, সাদা গোল মরিচ ১০০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ৬৮০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায়, জয়ফল ৬৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকায়, কিসমিস ২৬৫ টাকা থেকে ২৭৫ টাকা, আলু বোখারা ৪৬০ টাকা থেকে ৪৯০ টাকা, কাঠবাদাম ৬১০ টাকা থেকে ৭১০ টাকা, পোস্তাদানা ৭৮০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বাজারের মসলার দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খুঁচরা বাজারেও। কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, দারুচিনি ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা ও এলাচি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজর ১৯০০ টাকায়, তেজপাতা ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ সাড়ে ৯৮০ থেকে ১ হাজার টাকা, কালো গোল মরিচ ৮০০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায়।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। চাল ও পেঁয়াজের পর এখন মসলার দামও বাড়ছে। এরপরও সরকারি কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না বাজারে।
বিক্রেতা সিরাজুল বলেন, ঈদকে ঘিরে অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাইকাররা দাম বাড়াচ্ছেন। গুটিকয়েক আমদানিকারকের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তাদের ওপর নির্ভর করছে বাজারে মসলার দাম। আরেক বিক্রেতা বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন বাজেটে বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে, এ কারণে মসলার দাম বাড়ছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজের দামও। আগের সপ্তাহের মতো দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দরে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা দরে।
ডিম দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১০৫ টাকা থেকে ১১০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১০৫-১১০ টাকা। আর সাদা বয়লার মুরগি আগের মতো ১৪০-১৫০ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।