হেলমেটবিহীন চালকদের কাছে তেল বিক্রি করেনি পাম্পগুলো
রিকু আমির ও মাসুদ আলম : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে হেলমেটবিহীন মোটর সাইকেল চালকদের জ্বালানি তেল না দেওয়ার নির্দেশনা কড়াকড়িভাবে পালন করেছে ঢাকার পাম্পগুলো। তবে কিছু পাম্প হেলমেটবিহীনদের কাছেই জ্বালানি তেল বিক্রি করেছে। গতকাল বুধবার ঢাকার অধিকাংশ পাম্পে পুলিশের নির্দেশনা কড়াকড়িভাবে পালন ও এ সংক্রান্ত ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানোর দৃশ্য দেখা গেছে। তেজগাঁওস্থ ট্রাস্ট ফিলিং স্টেশন, মহাখালীস্থ ক্লিন ফুয়েল পাম্প, সিটি ফিলিং স্টেশন, আসাদগেটের সোনার বাংলা ফিলিং স্টেশনসহ বেশকিছু পাম্পে দেখা যায়, খুব কড়াকড়িভাবে নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে, নির্দেশ লেখা একাধিক ব্যানারও টাঙানো ছিল। হেলমেট পড়ে কাছে গিয়ে জ্বালানি নিতে হয়েছে মোটর সাইকেল চালকদের। হেলমেট ছাড়া কাউকে জ্বালানি দেয়া হচ্ছিল না।
তবে দুপুর ৩টার দিকে মৎস্যভবন সংলগ্ন রমনা পেট্রোল পাম্পে দেখা যায় হেলমেট ছাড়া একজন যুবককে তেল দিচ্ছেন বিক্রয়কর্মী আশরাফুল। পুলিশের নির্দেশাবলী স্মরণ করিয়ে দিলে আশরাফুল বলেন, হেলমেট ছাড়া তেল না দেওয়ার নির্দেশনা আমার জানা নেই। তবে এখন জেনেছি, আর দেয়া হবে না।
মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ঘোষণা দিয়েছেন, হেলমেটবিহীন মোটর সাইকেল চালকদের জ্বালানি তেল দেয়া হবে না। ডিএমপি কমিশনার সাক্ষরিত নির্দেশনাটি লিখিত আকারে ডিএমপি চার ট্রাফিক বিভাগের প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে যার যার এলাকার পাম্পে লিখিত নির্দেশটি পাঠিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।
আসাদগেটস্থ সোনার বাংলা ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার (অপারেশন) হিমালয় ম-ল জানান, ৫ সেপ্টেম্বর ট্রাফিক অফিস থেকে তাদের কাছে লিখিত নির্দেশটি দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী হেলমেটবিহীন মোটর সাইকেল চালকদের কাছে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হচ্ছে না। পাশপাশি এই নির্দেশনা দিয়ে ব্যানার তৈরি করে এমনস্থানে লাগানো হয়েছে, যাতে মোটর সাইকেল চালকরা সহজেই দেখতে পারেন।
পরীবাগস্থ মেঘনা মডেল সার্ভিসে দেখা গেছে, লাইনে ধরে জ্বালানি নিচ্ছেন মোটর সাইকেল চালকরা। সবার মাথায় হেলমেট। দেয়ালে সাটিয়ে দেওয়া কাগজে লেখা রয়েছে হেলমেটবিহীন চালক অথবা মালিকের মোটর সাইকেলে পেট্রোল ও অকটেন সরবরাহ করা হয় না।
এখানের বিক্রয়কর্মী মাসুদুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার থানা থেকে জানানো হয়েছে, হেলমেট ছাড়া তেল বিক্রি করা যাবে না। হেলমেট ছাড়া কেউ তেল নিতেও আসেনি। বুধবার খুব সকালে একজন এসেছিল, তার হেলমেট চুরি হয়ে গেছে বলে জানায়। তাই তাকে তেল দিয়েছি।
ট্রাস্ট ফিলিং স্টেশনের সেলস অফিসার কামরুল হাসান বলেন, নির্দেশটি খুবই ভাল। এতে মোটর সাইকেল চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। যদিও চালকদেরই উচিৎ নিজের স্বার্থে হেলমেট ব্যবহার করা। এখানে তো পাম্পের কোনো স্বার্থ নেই।
মোটরসাইকেল চালক আলী নেওয়াজ রাজীব বলেন, দুর্ঘটনায় জীবন বাঁচানোর জন্যই হেলমেটের ব্যবহার। যেটি আমাদের নিজেদেরই নেয়ার কথা সেই উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। তাদের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই।
রমনা পেট্রল পাম্পের বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বুধবার বিকালে জানান, ওই পাম্পের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে। কোনোভাবেই কোনো পাম্পকে নির্দেশ অমান্য করতে দেয়া হবে না।