ফেসবুক যখন অস্ত্র!
আসিফুজ্জামান পৃথিল: বেশ কয়েকবছর ধরে গৃহযুদ্ধে প্রায় ধ্বংসের মুখে পৌছেছে লিবিয়া। সাম্প্রতিক সময়ে ত্রিপোলিতে সর্বশক্তিতে আঘাত হেনেছে বিদ্রোহীরা। ইদানিংকালে রাজধানী ত্রিপোলির আশেপাশে বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও মোবাইল ফোন হাতে দেখা যাচ্ছে। যাদের হাতে রাইফেল তারাও যেমন যুদ্ধ করছেন, যাদের হাতে মোবাইল ফোন তারাও সেই ফোনের একটি অ্যাপকে ব্যবহার করে যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন! অ্যাপটি ফেসবুক!
ত্রিপোলিতে রকেট বৃষ্টি এখন নিত্যকার ঘটনা। সাম্প্রতিক সময়ে এই রকেট হামলায় বিদেশীদের কাছে জনপ্রিয় একটি হোটেল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, একমাত্র সচল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধে বাধ্য করা হয়েছে, ৪০০ কয়েদি জেল ভেঙে পালিয়েছেন। এই সবগুলো ঘটনায় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ফেসবুককে!
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো নিজেদের ফেসবুক পেজে নিয়মিতভাবে হামলার হুমকি এবং লিবিয়াকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবার ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই কিবোর্ড যোদ্ধারা শুধু প্রোপাগা-া মাধ্যম হিসেবেই যে ফেসবুককে ব্যবহার করছে তা নয়। বিভিন্ন হামলার ক্ষেত্রে হামলাস্থলের মানচিত্র, পিনপয়েন্ট জিপিএস লোকেশন এবং যুদ্ধক্ষেত্রের গাইডেন্স সরবরাহ করার জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কিছুদিন আগেই সরকারী বাহিনীর একটি বিমানঘাটির মানচিত্র এবং অবস্থান ফেসবুকে শেয়ার করেন এক ব্যবহারকারী। এরই ভিত্তিতে ঘাটিটিতে হামলা চালানো হয়। ফেসবুকে সেই ব্যবহারকারী লেখেন, ‘ওয়াদি আল রাবির ট্রাফিক লাইট থেকে এই বিমান ঘঁটির রানওয়েটির দূরত্ব ঠিক ১৮ কিলোমিটার। এর অর্থ একে ১৩০ মিলিমিটার কামান থেকে আঘাত করা সম্ভব। নিচের ছবির সাথে অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছে।’
লিবিয়ার বিদ্রোহী গ্রুপগুলো নিজেদের সমালোচক ও বিরোধীদের ফেসবুকের মাধ্যমে খুঁজে বের করে। পরবর্তীতে এদের অনেকেই আটক ও হত্যার শিকার হন। কাউকে আবার নির্বাসনে যেতেও বাধ্য করা হয় বলে মনে করে লিবিয়ার মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। এছাড়াও জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে অনুসারিদের উৎসাহিত করেন কমান্ডাররা। নিউ ইয়র্ক টাইমস