পরিবেশ দূষণে বছরে ক্ষতি ৫২ হাজার কোটি টাকা
স্বপ্না চক্রবর্তী : অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতিবছরে ক্ষতি হয় ৫২ হাজার কোটি টাকা। ‘বাংলাদেশের পরিবেশগত সমীক্ষা-২০১৮’ এর প্রতিবেদনে উঠে আসা এই হিসাব দেশের মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। গতকাল রোববার রাজধানী হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের পরিবেশগত সমীক্ষা-২০১৮’ এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
বাংলাদেশের দূষণ নিয়ে ‘ইনহ্যান্সিং অপারচুনিটিজ ফর ক্লিন অ্যান্ড রেসিডেন্ট গ্রোথ ইন আরবান বাংলাদেশ, কান্ট্রি এনভায়রণমেন্ট এনালাইসিস ২০১৮’ শিরোনামে প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী পার্লকার বলেন, প্রতিবছর শহরাঞ্চলের পরিবেশ দূষণে দেশের ক্ষতি হচ্ছে ৬.৫ বিলিয়ন ডলার। এটি দেশের মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধির অর্ধেক, অর্থাৎ ৩.৪ শতাংশ। এটি বিরাট উদ্বেগের বিষয়। কারণ, ২০১৫ সালেই পরিবেশ দূষণের কারণে মারা গেছেন ৮০ হাজার মানুষ। দেশব্যাপী যে রোগব্যাধি হচ্ছে তার ২৮ শতাংশ রোগের কারণ পরিবেশ দূষণ। যেখানে বিশ্বব্যাপী এর গড় হার ১৬ শতাংশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বছরে যেসব মানুষ মারা যায় তার ২৮ শতাংশই পরিবেশ দূষণের কারণে। অথচ সারা বিশ্বে এই হার মাত্র ১৬ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমরা পরিবেশ দূষণ নিয়ে সচেতন। এ বিষয়ের ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান হাতে নিয়েছি। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টির কথা মনে রাখতে হবে। তিনি বলেন, লাইসেন্স না নিয়েই অনেকে ইটভাটা তৈরি করছে। পরিবেশ দূষণের জন্য ইটভাটা অনেকাংশে দায়ী। ঢাকা শহরের বায়ু দূষণের ৫৮ শতাংশ হয় ইট ভাটা থেকে। মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি পরিবেশ আইন করতে যাচ্ছি। সেটি বাস্তবায়ন হলে ইটভাটা এভাবে আর গড়ে উঠতে পারবে না। তবে আইনের বাইরেও জনসাধারণকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ বাংলাদেশ, বিশ্ব ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।