আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৩
বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১ লাখ টন কয়লা আমদানি অনিশ্চিত
শাহীন চৌধুরী : বড়পকিরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করতে সরকার জরুরী ভিত্তিতে এক লাখ টন কয়লা আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিলেও বিষয়টি এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কয়লার অভাবে ইতিপূর্বে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে। তাই বাকী ২টি ইউনিট এই মূহুর্তে চালু করতে আর সরকারের আগ্রহ নেই। সেকারনেই কয়লা আমদানি করা আপাতত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটই গত ২২ আগস্ট বন্ধ হয়ে যায়। একারনে দেশের উত্তরাঞ্চলে মারাত্মক বিদ্যুৎ সংকট দেখা দেয়। ২৬ আগস্ট সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জরুরি প্রয়োজন মেটাতে সরকার এক লাখ টন কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, আপদকালীন মজুদ হিসেবে আপাতত এক লাখ টনের মতো কয়লা আমদানি করা হবে। এজন্য টেন্ডার হয়ে গেছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্টক বিল্ডআপ করার জন্য আমরা ওই নির্দিষ্ট পরিমাণ কয়লা আমদানি করবো। এটা রেগুলার ভিত্তিতে হবে না।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কয়লা খনিতে যেকোনো সময় ওয়াটার বিল্ডআপ করতে পারে। তখন কি হবে। আবার অনেক দেশে অনেক রকম ধস নেমেছে। অনেক লোক মারাও গেছে। খনিতে পরিস্থিতি হয় এরকম। ইমার্জেন্সি পরিস্থিতির জন্য আমরা একটা স্টক বিল্ডআপ করতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কয়লা আমদানি করতে যাচ্ছি। এক লাখ টনের মতো আমদানি করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্তের পর এ ব্যাপারে তৎপরতা শুরু হয়। কয়লা আমদানির জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়। আমদানির অফার লেটারের ভিত্তিতে ১৩টি কোম্পানি এ ব্যাপারে তাদের আগ্রহের কথা জানায়। ইতিমধ্যেই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। উত্তোলিত কয়লার মজুত একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌছিলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বড় ইউনিটটি চালু করা হয়। খনির নিজস্ব কয়লা দিয়েই এই ইউনিটটি চালু রাখা সম্ভব। মূলত এই কারনেই কয়লা আমদানির ব্যাপারে সরকারের আগ্রহ কমে যায়।
এখন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ১২৫ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। এই দুটি ইউনিট আপতত চালু হচ্ছে না এটা প্রায় নিশ্চিত। যেহেতু শীত চলে আসছে তাই আগামী এক মাস পর বিদ্যুতের চাহিদাও কমে যাবে সেই কারনেও এখন আর ওই দুটি ইউনিট চালু করতে সরকার আগ্রহী নয়। এ ব্যপারে যোগাযোগ করা হলে বিপিডিবি’র পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, যেহেতু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির একটি বড় ইউনিট চালু হয়ে গেছে তাই আমরা আপতত কয়লা আমদানি নিয়ে ভাবছিনা। আমাদের খনির নিজস্ব কয়লা দিয়ে আগামীতে বাকী দুটি ইউনিটও চালু করার চেষ্টা করা হবে। যদি তা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে কয়লা আমদানি করার বিষয়টি ভাবা হবে।