ঋণ খেলাপি সমস্যা সমাধানে ‘মাস্টার অ্যাকাউন্ট’-এর সুপারিশ করলেন ড. আহমদ আল কবির
আশিক রহমান : ঋণ খেলাপি সমস্যা সমাধানে ‘মাস্টার অ্যাকাউন্ট’-এর সুপারিশ করলেন রুপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, একজন ক্লায়েন্ট দশটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারেন। ওই ক্লায়েন্টের একটা অ্যাকাউন্টকে ‘মাস্টার অ্যাকাউন্ট’ ঘোষণা দিয়ে তাকে বলতে হবে যে, ওমুক ব্যাংকে আমার মাস্টার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। মনে করুন, আমি ব্যবসা করি। সোনালী, রুপালী বা অন্য কোনো ব্যাংকে গেলাম আমি ঋণ প্রাপ্তির আশায়। বড় বড় ব্যবসায়ীরা এমনটি করেন, প্রায় সব ব্যাংকেই তারা যান। সরকারের আইন করা উচিত অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা দেওয়া উচিত যে, ওই ক্লায়েন্টকে বলতে হবে কোন ব্যাংকে তার মাস্টার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওখানে সব তথ্য দিতে হবে। রুপালী ব্যাংকে যদি আমার মাস্টার অ্যাকাউন্ট থাকে, এখানে সব তথ্য থাকতে হবে। এখন অগ্রণী অথবা অন্য কোনো ব্যাংক যদি ঋণ দিতে চায় কোনো বাধা নেই, কিন্তু মাস্টার অ্যাকাউন্ট যে ব্যাংকে, সেই ব্যাংকের মতামত নিতে হবে। এটা যদি করা যায় তাহলে নামে-বেনামে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা অনেক কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যাদের কাছে ঋণ আটকে আছে তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা করতে হবে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হচ্ছেÑ ব্যাংক ও ঋণ খেলাপিদের মধ্যেকার আলোচনা। উভয়পক্ষ যদি এতে একমত হন, তাহলে সেটা হতে পারে। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংককেও থাকতে হবে। ত্রিপাক্ষিক আলোচনারও প্রয়োজন আছে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক, ঋণ খেলাপি এবং কনসার্ন ব্যাংক মিলে যদি টাকা উদ্ধার করতে পারে সেটাই হবে উত্তম কাজ। আমার অভিজ্ঞতা বলছে, এতে ৫০ ভাগ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এখানে যদি একটি নমনীয় ভূমিকা নিয়েও সমাধান মিলে তাহলে সেটাই করা উচিত। আইনি লড়াই থেকে এটাই সর্বোত্তম।
এক প্রশ্নের জবাবে এই অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকার বলেন, আলোচনার মাধ্যমে যারা সমাধানে আসতে রাজি হবেন না তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নামমাত্র ব্যবস্থা নয়। এ সমস্যা সমাধান করতে উচ্চ আদালতে গেলে দেখা যায় যে, ১০-১৫ বছর ধরে ঝুলে আছে। এখানে সরকার যেটা করতে পারে, বিচারবিভাগের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ‘বিশেষ আদালত’ প্রতিষ্ঠা করা। কারণ উচ্চ আদালতে কোনো ধরনের বিশেষ আদালতের ব্যবস্থা নেই।