তুলা আমদানিতে বছরে সরকারের ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকা
মোহাম্মদ রুবেল : বাংলাদেশে অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বস্ত্রশিল্প। এই শিল্পের অন্যতম কাঁচামাল তুলা। দেশের ৩৮৩টি সুতা কারখানায় বছরে ৪১ লাখ বেল তুলা চাহিদার বিপরীতে ৪০ লাখ বেল তুলা আমদানি করতে হচ্ছে। আর এতে প্রতি বছর সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকা বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ড।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সাল নাগাদ দেশের স্পিনিং মিলগুলোতে প্রায় ১ কোটি বেল তুলার প্রয়োজন হবে। দেশে তুলা উৎপাদন বৃদ্ধি না করলে আমদানিতে ব্যয় দাঁড়াবে ৬০ হাজার কোটি টাকা।
তুলা আমদানি বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. ফরিদ উদ্দিন জানান, তুলা আমদানি কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য হাইব্রিড জাতের তুলা চাষের প্রচলন করা হচ্ছে। এতে বর্তমানে হেক্টর প্রতি তুলা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ বিষয়ে এ প্রতিবেদককে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মসূচি পরিচালক (নিবিড় তুলাচাষ কর্মসূচি) ড. মো: গাজী মর্তুজা খান জানান, তুলা উৎপাদন বাড়াতে বর্তমানে হাইব্রিড বীজ প্রবর্তনের মাধ্যমে তুলা চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এ প্রকল্পের আওতায় তুলা উৎপাদন করে ১ কোটি বেল তুলার প্রয়োজন মেটানো সম্ভব নয়। তবে, এরফলে বছরে ৬ থেকে ৭ লাখ বেল তুলা উৎপাদনের মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
তিনি আরো জানান, হাইব্রিড বীজ প্রবর্তনের মাধ্যমে তুলা উৎপাদন করে সরকারের ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা আয় হবে। এই অর্থ সরকারের রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন, ব্যবস্থাপক উৎপাদন ও ইনচার্জ (কারিগরী) নাজমুল হক জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সাধারণত কার্পাস তুলার চাষ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তুলা উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যার ফলে তুলা উৎপাদন কমে গেছে। তবে রাজশাহী, যশোর এলাকায় নতু কওে চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশে উৎপাদিত তুলার আঁশ খুবই মোটা এবং দৈর্ঘ্যে কম। আঁশ মোটা হওয়ায় কাপড়ের মান ভালো হচ্ছে না। ফলে দিন দিন দেশীয় বন্ত্রের চাহিদা কমে যাচ্ছে। এ বাস্তবতায় বস্ত্র উৎপাদনে তুলার চাহিদা মেটাতে বিশ্ববাজার থেকে আমদানি করতে হচ্ছে।