৫৬ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত
সোহেল রহমান : আগামী বছরে চার ক্যাটাগরির প্রায় ৫৬ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার। এর মধ্যে অর্ধেক পরিমাণ জ্বালানি তেল সরকারি পর্যায়ে অর্থাৎ জি-টু-জি’র মাধ্যমে আটটি দেশের ৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে এবং অবশিষ্ট অর্ধেক উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা হবে। অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে জ্বালানি তেল আমদানির এই প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিক্রয় প্রবণতা ও মজুদ বিবেচনায় ২০১৯ সালে দেশে চার ক্যাটাগরির মোট ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সম্ভাব্য প্রাপ্তি বাদে মোট জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে ৫৫ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৪৬ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল (ডিজেল), ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন জেট এ-১ ফুয়েল, ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল ও ৬০ হাজার মেট্রিক টন মোগ্যাস রয়েছে।
সূত্র জানায়, জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যে জি-টু-জি নেগোসিয়েশন বৈঠক সাধারণত প্রতিবছর অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই বৈঠকে সারা বছরের জ্বালানি তেল আমদানির পরিমাণ এবং জানুয়ারি-জুন প্রান্তিকের প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়। চাহিদার অর্ধেক হিসাবে আগামী বছর জি-টু-জি’র মাধ্যমে মোট ২৮ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ২৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল (ডিজেল), ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন জেট এ-১ ফুয়েল, ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল ও ৩০ হাজার মেট্রিক টন মোগ্যাস রয়েছে।
জি-টু-জি ভিত্তিতে যেসব দেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে এর মধ্যে রয়েছেÑ কুয়েতের ‘কেপিসি’, মালয়েশিয়ার ‘পিটিএলসিএল’, আরব আমিরাতের ‘ইনোক’, চীনের ‘পেট্রোচায়না’ ও ‘ইউনিপেক’, ফিলিপাইনের ‘পিআইটিসি’, ইন্দোনেশিয়ার ‘বুমি সিয়াক’ ও থাইল্যান্ডের ‘পিটিটিটি’। এছাড়া ভারতের ‘নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড’ (এনআরএল) থেকে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হবে। সূত্র জানায়, ‘এনআরএল’ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানির লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ‘ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি’ সই করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য আগের ধারাবাহিকতায় ডিজেল আমদানি করা হবে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের জ্বালানি তেলের অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ‘ইস্টার্ণ রিফাইনারি লিমিটেড’ (ইআরএল) ও অন্যান্য উৎস থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ডিজেল, ৩ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল ও ২ লাখ ৫ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন মোগ্যাস পাওয়া যায়।