মানবিক সংকটের প্রথম শিকার কন্যাশিশুরা -প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল
লিহান লিমা : বিশ্বজুড়ে চলা মানবিক সংকটের প্রথম শিকার হয় কন্যাশিশুরা। শৈশব পার না করা এই শিশুরা জোরপূর্বক বিয়ে, যৌন নিপীড়ন, দাসত্বের মত নৃশংসতার শিকার হয়। সেই সঙ্গে শিক্ষার সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত। মানবাধিকার বিষয়ক এনজিও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল জানায়, সংঘর্ষের শিকার কন্যাশিশুরা ছেলেশিশুদের তুলনায় ১৪ বারেরও বেশি নির্যাতনের শিকার হয়। এনজিওটি জানায়, তারা সোমবার সংঘর্ষের কবলে পড়া এই শিশুদের ভবিষ্যত নিয়ে করা তিনটি তদন্তের প্রতিবেদন জাতিসংঘে উপস্থাপন করে। এই তিনটি গ্রুপের মধ্যে ছিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও সন্ত্রাসবাদের শিকার হওয়া আফ্রিকার চাঁদ বেসিনের নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠি ও গৃহযুদ্ধের শিকার হওয়া দক্ষিণ সুদানের নাগরিকরা।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নেয়া শিশুদর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। এছাড়াও তারা ক্ষুধা, মারধর, ধর্ষণ, অপহরণ ও জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তির শিকার। ৫ জনের মধ্যে ১ জন রোহিঙ্গা শিশুকে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয়।
উগান্ডার শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া দক্ষিণ সুদানের ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী ২৪৯ জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে জানা যায়, নারী এবং শিশুরা ভয়ঙ্কর নির্মমতার শিকার হন। এনজিওটি জানায়, সমীক্ষায় দেখা গেছে নির্যাতনের শিকার হওয়ার ৪ জনের মধ্যে কমপক্ষে ১ জন আত্মহত্যা করে। এর মধ্যে ৭৫ ভাগই পর্যাপ্ত খাদ্য পায় না।
চাঁদ বেসিনের সংঘর্ষকে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক মানবিক সংকট বলে অভিহিত করে। ৩ জনের মধ্যে ১ জন টিনএজার জানায়, তারা দেশে নিরাপদ বোধ করছেন না, ৫ জনের মধ্যে ১ মারধরের শিকার হয় ও ১০ জনের মধ্যে ১ জন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। নাইজেরিয়া, নাইজার ও ক্যামেরুনের ৪৪৯ জন কন্যাশিশুর সাক্ষাৎকার নিয়ে জানা যায়, এদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ সংঘর্ষের কারণে তাদের বাবার কাছ থেকে আলাদা হয়েছে ও ৩০ ভাগ বাবা-মা দুইজনকেই হারিয়েছে। ৬২ ভাগ জানায়, তারা খাদ্যাভাবে ভুগছে। নাইজারের তিন-চতুর্থাংশ শিশুরই বিয়ে হয় ১৮ বছরের আগে। এএফপি।