নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ৮৫০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল
আদম মালেক : নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সাড়ে ৮শ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল রয়েছে। অথচ দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এই ঋণ বিতরণে তেমন আগ্রহ নেই। নারীদের মাঝে এসএমই খাতের ১০ শতাংশ ঋণ বিতরণের নির্দেশনা থাকলেও চলতি অর্থবছরের জুন প্রান্তিকে বিতরণ হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, নারী উদ্যোক্তা তৈরির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ১০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে। ২০১৪ সালের জুন মাসে এই তহবিল গঠন করা হয়। সে সময় এ তহবিলের অর্ধেক অর্থও বিতরণ হয়নি। তবুও পরবর্তীকালে এ তহবিলের পরিমাণ বাড়িয়ে ৮৫০ কোটি করা হয়। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এ তহবিল থেকে ঋণ দিচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল রয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলো নিচ্ছে না। তারা না নিলে তো আমাদের কিছু করার নেই। আমরা তো তাদের টাকার নিরাপত্তা দিতে পারি না।
জানা গেছে, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো ঋণ দেয়ার নামে কালক্ষেপণ করছে। এছাড়া বিনা জামানতে ঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো। সেই সঙ্গে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা ও বাড়ি বা জমি জামানত (গ্যারান্টি) হিসেবে চায়। অনেক ক্ষেত্রে ঋণ নিতে এত বেশি আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বা কাগজপত্র দেখাতে হয় যে তা হয়রানির পর্যায়ে চলে যায়। তাছাড়া ব্যাংকগুলো যে উদ্যোক্তাদের ঋণ দিচ্ছে তাও উৎপাদন খাতে কাজে আসছে না। বরং ঋণ গ্রহীতারা পারিবারিক কাজে এসব অর্থ ব্যয় করছেন। আবার ঋণ গ্রহণে নারীদের অজ্ঞতাও লক্ষ্য করা যায়। সেজন্য প্রত্যেক বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখাকে নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন ইউনিট স্থাপন করে সেখানে নারী কর্মকর্তা নিয়োগের কথা থাকলেও বেশিরভাগ ব্যাংকই তা বাস্তবায়ন করেনি।
অনলাইন প্রতিষ্ঠান গুটিপার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা মিজি বলেন,অনেক ক্ষেত্রে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের রক্ষণশীল আচরণ নারীদের পিছিয়ে দেয়। তারা অনেক বেশি কঠিন কওে ফেলে ঋণের প্রক্রিয়াটি। আমি হয়রানির শিকার হয়েছি। এমন অনেক নারীই হচ্ছেন। সরকার থেকে অনেক নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবিক ক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার বিষয়টি নারীদের জন্য খুব বেশি সহজ হয় না।