একনেকে ১৪ হাজার ২শ কোটি টাকায় ১৭ প্রকল্প অনুমোদন
সাইদ রিপন : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেকে) গতকালের সভায় ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১৪ হাজার ২০০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে দেয়া হবে ১১ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে ২ হাজার ৮১২ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য পাওয়া যাবে ১৯৫ কোটি টাকা।
গতকাল শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান। ব্রিফিংয়ের শুরুতেই মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে আরো দুটি একনেক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ চলতি অর্থবছরে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে আমাদের ১৪টি একনেক সভা হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় কাজে দেশের বাহিরে থাকায় এখন পর্যন্ত আমাদের ১০টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এজন্য আমরা বাকি সভাগুলো করতে চাই। তাছাড়া একনেকে উপস্থাপনের জন্য অনেকগুলো প্রকল্প প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় সাধারণত বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করেন না। এ সময় সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। তাছাড়া আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে এমন পথ তৈরি করতে চাই, যাতে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা ওই পথেই হাঁটতে পারেন। পরিবেশ তৈরি ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের বিনিয়োগ করতে উৎসাহ দেয়া হবে। উন্নয়নের গতি থামানো যাবে না। নির্বাচন চলবে, আবার উন্নয়নও হবে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজশাহী মহানগরের পানি সরবরাহের কভারেজ ৭১ শতাংশ। তবে রাজশাহী ওয়াসা মোট পানি উৎপাদনে ৯৬ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে। ভূ-গর্ভস্থ উৎস্য হতে অস্বাভাবিক পানি উত্তোলনের ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্থিতিতল প্রতি বছরে শূণ্য দশমিক ৫ থেকে ১ মিটার নীচে নেমে যাওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর বিরুপ প্রভাব তৈরী হচ্ছে। এজন্য রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপরিস্থিত পানি শোধনাগার শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৪ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিওবি থেকে দেয়া হবে এক হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা, এবং প্রকল্প সাহায্য থেকে পাওয়া যাবে ২ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিবাস নির্মাণ প্রকল্প, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাস-ট্রাক টার্মিনাল তৈরি প্রকল্প, ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প, বৈরাগীরপুল (বরিশাল) টুমচর-বাউফল (পটুয়াখালী) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের নিমিত্তে নন্দিগ্রাম-তালোড়া-দুঁপচাচিয়া-জিয়ানগর-আক্কেলপুর জেলা মহাসড়ক এবং নন্দিগ্রাম-কালীগঞ্জ-রানীনগর জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চত্বরে একটি বহুতল অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন-চট্টগ্রাম জোন (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প, মোল্লাহাটে ১০০ মেগাওয়াট সোলার পিভি পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি প্রকল্প, যশোর অঞ্চলের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, খুলনা-বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রকল্প (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প, পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্প, বৃহত্তর ঢাকা জেলা সেচ উন্নয়ন প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্প, রংপুর জেলার মিঠাপুকুর-পীরগাছা-পীরগঞ্জ ও রংপুর সদর উপজেলায় যমুনেশ্বরী প্রকল্প, উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন এবং দ্য প্রজেক্ট ফর দ্য ইমপ্রুভমেন্ট অব রেসকিউ ক্যাপাসিটিস ইন দ্য কোস্টাল অ্যান্ড ইনল্যান্ড ওয়াটারস প্রকল্প। সম্পাদনা : ইকবাল খান