হ্যাশট্যাগ মিটু জোয়ার : পদত্যাগ করলেন ভারতের প্রতিমন্ত্রী এমজে আকবর
আসিফুজ্জামান পৃথিল : হলিউডের পর এবার হ্যাশট্যাগ মিটু ঝড়ে কেঁপে উঠেছে ভারত। বলিউড থেকে রাজনীতির অঙ্গন সব স্থানেই নিজেদের সাথে হওয়া যৌন হেনস্থার প্রতিবাদে সরব ভারতের নারীরা। এর জেরেই এবার পদত্যাগ করলেন যৌন হেনস্থার অভিযোগে অভিযুক্ত ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এমজে আকবর। ইয়ন, এনডিটিভি, এএনআই, ফাস্টপোস্ট
অভিযোগ ওঠার পর থেকেই ভারতের সকল মহল আকবরের পদত্যাগ দাবি করছিলো। গতকাল রোববার নাইজেরিয়া সফর শেষে দেশে ফিরে আকবর জানান, তিনি নিজের পদত্যাগ ও তার বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগে পরে কথা বলবেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করে, আকবর ইমেইলের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। এই সাবেক পত্রিকা সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন কমপক্ষে ১২ জন নারী। তাদের অভিযোগ আকবর সম্পাদক থাকাকালে তারা হেনস্থার শিকার হন। এনডিটিভির সংবাদে বলা হয়েছে, এমজে আকবরের পদত্যাগ নিয়ে সাংঘর্ষিক বক্তব্য পাওয়া গেছে। সূত্রের দাবি, যৌন হয়রানির অভিযোগ আসার পরই এমজে আকবর বুঝতে পারেন, তার পদ নড়েবড়ে। কারণ, এ ইস্যুতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে ফোন করেছিলেন।
হ্যাশট্যাগ মিটু ক্যাম্পেইনের আওতায় যেসব নারী এমজে আকবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তাদের অধিকাংশই সাংবাদিক এবং তার অধীনে কাজ করেছেন। তিনি যখন সম্পাদক ছিলেন, এসব নারীরা চাকরির সাক্ষাৎকার দিতে এসে যৌন নিপীড়নের শিকার হন। এমজে আকবরের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ আনেন সাংবাদিক প্রিয়া রমনী, গত ৮ অক্টোবর। তিনি টুইটে উল্লেখ করেন, বছরখানিক আগে ভোগ ইন্ডিয়ার একটি নিবন্ধের বিষয়ে আলাপ করতে গেলে এমজে আকবর তাকে যৌন হয়রানি করেন। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভে উইনস্টেইনের যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রথম হ্যাশট্যাগ মিটু’র মাধ্যমে ক্যাম্পেইন শুরু হয়। এরপর সম্প্রতি তা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। আকবরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগকারীদের মধ্যে আরো রয়েছেন, প্রিয়া সিং বিন্দ্রা, ঘাজালা ওয়াহাব, সুপ্তা পাল, আনজু ভারতী, সুপর্ণা শর্মা, সোমা রাহা, মালিনী গুপ্তা, কণিকা গৌলত, কাদম্বরি এম ওয়েড ও মাজলি দ্য পু ক্যাম্প।
ক্ষমতাসীন বিজেপি এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে দলটির অনেক মন্ত্রীই এই ক্যাম্পেইন সমর্থন করছেন। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী মানেকা গান্ধী এমজে আকবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবসম্পদ প্রতিমন্ত্রী রামদাস অথাওলে বলেছেন, ‘যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হলে এমজে আকবরের পদত্যাগ করা উচিত।’
গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘যেই যৌন নিপীড়নের শিকার হন না কেন মুখ খুলতে হবে, লজ্জা পেয়ে লাভ নেই।’ ইতোমধ্যে ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস, কমিউনিস্ট পার্টি, অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনসহ বিভিন্ন দল এমজে আকবরকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন।