‘ওস্তাদ সামনে সার্জেন্ট, সাবধান’
আহমেদ ইসমাম: ‘ওস্তাদ সামনে সার্জেন্ট, সাবধান!’ এভাবেই ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ারে চিৎকার করে বলছিলেন সাভার থেকে আসা ঠিকানা পরিবহনের একটি বাসের সহকারী। একই সময়ে বাসের চালকও বলে উঠলেন ‘দরজা বন্ধ কর তাড়াতাড়ি। কেউ যেন নামতে না পারে, নামলেই মামলা খাব।’ অথচ এর একটু আগেই কলেজ গেটের মোড়ে সার্জেন্ট না থাকায় বাস থামার জায়গা উপেক্ষা করে যাত্রী তুলেছে এবং নামিয়েছে। এমনই চিত্র দেখা যাচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাস সার্ভিসগুলোতে। রাজধানীতে রেকর্ডসংখ্যক মামলা দিয়েও গণপরিবহনের অনিয়ম ঠেকাতে পারছে না পুলিশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু মামলা দিয়ে গণপরিবহনের অনিয়ম ঠেকানো সম্ভব না। এর জন্য দরকার বাসচালকদের নৈতিক শিক্ষা।
এ বিষয়ে ডিএমপির ধানমন্ডি ট্রাফিক জোনের সিনিয়র সহকারি কমিশনার আকরাম হোসেন বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশ সার্বক্ষণিক যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত রয়েছে। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংসহ ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারি যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে। পাশাপাশি চালক লাইসেন্সের বিষয়েও ট্রাফিক সার্জেন্টরা সরব রয়েছেন। কোন যানবাহন ট্রাফিক আইন অমান্য করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে ট্রাফিক পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করতেও পারে। এক্ষেত্রে টহলরত (হলুদ) সার্জেন্টরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন।’
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখন ডিজিটাল দেশ হয়েছি। আমাদের সড়কে শৃংখলা ফেরাতে হলে মোড়গুলোতে ডিজিটাল সিসি ক্যমেরা লাগতে হবে। কোনো গাড়ি যদি আইন অমান্য করে, তবে স্বয়ক্রিয় ভাবে গড়িটির নামে মামলা হবে। কারণ একটি শহরের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে সার্জেন্ট থাকা সম্ভব না। এই নিয়ম বিশ্বের অনেক দেশেই আগে থেকেই চালু রয়েছে। আমাদের দেশে এই নিয়ম চালু করা এখন সময়ের দাবি।
মোহাম্মদপুর থেকে মতিঝিল যাতায়াত করেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকুরিরত মিলন। তিনি জানান, ‘যে সব মোড়ে সার্জেন্ট থাকে, শুধু সে জায়গাগুলোতে বাসের হেলপার দরজা বন্ধ রাখে এবং কাউকে উঠতে বা নামতে দেয় না। কিন্তু সার্জেন্ট সামনে না থাকলেই যে কোনো জায়গায় দরজা খুলে যাত্রী উঠা নামা করায়। সিটিং সার্ভিস দেওয়ার নামে ভাড়া আদায় করলেও যে কোনো জায়গায় থামিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করে।’
মিলনের মতো আরো অনেক সাধারণ যাত্রীর অভিযোগ করলেও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না, এটাই বাস্তবতা। সম্পাদনা : ঈসমাইল হুসেন ইমু, সালেহ্ বিপ্লব