চিকিৎসা ব্যয় সামাল দিতে গিয়ে বছরে ৫২ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে
বিশ্বজিৎ দত্ত : দেশের অর্থনীতি ক্রমেই বিকাশ মান। বিশ্বের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তালিকাতেও বাংলাদেশ রয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে নিয়ে যাবেন বলে ঘোষণাও দিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল। কিন্তু এই বৃদ্ধির ফাঁক গলে প্রতি বছর চিকিৎসা খরচ মিটাতে গিয়ে সাড়ে ৫২ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। এরজন্য দায়ি করা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে সরকারের বরাদ্দ কম থাকাকে। আন্তর্জাতিক মান হিসেবে প্রয়োজনের তুলনায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে মাত্র এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মান হিসেবে মাথাপিছু চিকিৎসা ব্যয় হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সুপারিশকৃত ৮৫ থেকে ১১২ মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশে মাত্র ৩৭ ডলার ব্যয় হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালে বাংলাদেশে মাথাপিছু চিকিৎসা ব্যয় ছিল ২৭ ডলার। সে তুলনায় প্রতিবেশী দেশ ভারতে ছিল ৬১, পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালে ৩৬, শ্রীলঙ্কায় ৮৯, থাইল্যান্ডে ২১৫, মালয়েশিয়া ৪১০, পাকিস্তানে ৩৯ ডলার।
তখন বাংলাদেশের ২৩ দশমিক ৭ ভাগ মানুষ চিকিৎসা নিতে পারলেও বৃহদাংশ ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশই ছিল চিকিৎসা গ্রহণ করতে অসমর্থ ছিল। সেখানে ভারতে সমর্থ ৩৩, অসমর্থ ৫৭ দশমিক ৬; নেপালে সমর্থ ৪০, অসমর্থ ৪৯ দশমিক ২, পাকিস্তানে সমর্থ ৩১ ভাগ ও অসমর্থ ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ।
সিপিডির স্বাস্থখাত নিয়ে এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, ১৪ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ পারিবারিক খরচের ১০ শতাংশের বেশি খরচ করছে চিকিৎসার জন্য।
দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বিভিন্ন বড় প্রকল্পে সরকারের বিনিয়োগের কারণে স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ কমে গেছে। বর্তমানে স্বাস্থ্যখাতে সরকারের বিনিয়োগ বাজেটের ২ শতাংশেরও কম।স্বাস্থ্যে এই পরিমাণ বিনিয়োগ নিয়ে সরকারের পক্ষে উন্নয়শীল দেশ হওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। সম্পাদনা : ইকবাল খান