১০ শর্তে ৬ হাজার ৩শ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
সোহেল রহমান : অভ্যন্তরীণ বাজারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর মূল্য সমন্বয়, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো ও নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নসহ প্রায় ১০টি শর্তে বাংলাদেশ সরকারকে বাজেট সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। তিন বছর মেয়াদে ‘ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট’ শীর্ষক এই বাজেট সহায়তার পরিমাণ হচ্ছে ৬ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা(৭৫ কোটি ডলার)। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছর এবং আগামী ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রতিবছর ২৫ কোটি ডলার করে এই ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। এ ঋণের সুদের হার হচ্ছে ২ শতাংশ। পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে বাংলাদেশকে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
জানা যায়, অন্যান্য শর্তের মধ্যে রয়েছেÑ বন্ডেড ওয়্যার হাউজ সুবিধা ও শুল্ক আইনের সংস্কার; বিনিয়োগের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু; বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ মোতাবেক নিরাপদ লেনদেন সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন; ঝুঁকিপূর্ণ ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রশাসনিক ও আইনগত সংস্কার; পোশাক শিল্প খাতের শ্রমিকদের জন্য বীমা আইন প্রণয়ন; শ্রম আদালতকে শক্তিশালী করা ও নারী কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একটি কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন, ডে কেয়ার আইন প্রণয়ন, প্রতিবছর বাজেটে জলবায়ু তহবিলে কত টাকা রাখা হয় সে বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা ইত্যাদি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছরেরও অধিক সময় পর বাজেট সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এর আগে বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ বাজেট সহায়তা ‘ডেভেলপমেন্ট ক্রেডিট সাপোর্ট’ ২০০৮ সালে শেষ হয়।
জানা যায়, বাজেট সহায়তার অর্থ পেতে সর্বশেষ গত নভেম্বরে বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, দারিদ্র্য বিমোচনে গত এক দশকে বাংলাদেশ অসাধারণ সফলতা অর্জন করেছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, বাংলাদেশ তা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি বাড়লেও এখানে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির হারের গতি শ্লথ। দেশে চাকরির বাজারে প্রতিবছর ২০ লাখ তরুণ ঢুকছে। নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে আরও অর্থায়ন দরকার। বিশ্বব্যাংকের বাজেট সহায়তার ৭৫ কোটি ডলার ঋণ পাওয়া গেলে ২ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
সূত্র মতে, প্রকল্পভিত্তিক যে ঋণ সহায়তাÑ সেটা শুধু সংশ্লিষ্ট প্রকল্পেই খরচ করতে হয়। সেখানে সরকারের কোনো স্বাধীনতা থাকে না। কিন্তু বাজেট সহায়তার টাকা যে কোনো খাতেই খরচ করা যায়। ঋণের শর্ত পূরণে কাজ চলছে। কয়েকটি শর্ত ইতোমধ্যেই পূরণ করা হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই পূরণ করা সম্ভব হবে। জানা যায়, মূলত: দেশে নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে ঋণের এই অর্থ ব্যয় করা হবে। সম্পাদনা : ইকবাল খান