‘ডার্ক ফ্লুইড’ সন্ধান দিতে পারে মহাবিশ্বের ৯৫ শতাংশ অজানা অংশের
এ. আর. ফারুকী : মহাবিশ্বের ক্রমাগত সম্প্রসারনের ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম এক ধরণের ‘কৃষ্ণ তরল’ বা ‘ডার্ক ফ্লুইড’। অ্যাস্ট্রোনমি এন্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সি জার্নালের এক নিবন্ধে বলা হয় তাত্ত্বিক ঋণাত্বক ভরের এই তরলটির অস্তিত্ব প্রমানিত হলে মহাবিশ্বের আমাদের আওতার বাইরে হারিয়ে যাওয়া ৯৫ ভাগ অংশের সন্ধান মিলবে। সাইন্সএলার্ট
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জেমি ফার্নেস বলেন, আমাদের আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বে ফিরে যাওয়া উচিৎ। এই তত্ত্ব দিয়ে স্থান-কালের সাপেক্ষে অভিকর্ষ বল ব্যাখ্যা করা যেতে পারে এবং এর সাহায্যেই হয়তো ঋণাত্বক ভরের ‘ডার্ক ফ্লুইডের’ অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এই কণা পদার্থবিদ্যার দুটো জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ রহস্যের জবাব দিতে সক্ষম। একটি হলো, ছায়াপথগুলো পরস্পর ঘূর্ণায়মান হওয়া সত্ত্বেও বিচ্ছিন্ন না হয়ে একসাথে থাকে কিভাবে এবং অন্যটি হলো অতীতের তুলনায় মহাবিশ্ব কেন অতিদ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে? তিনি বলেন, অভিকর্ষজ বলের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য তাত্ত্বিকভাবে দায়ি করা হয় কৃষ্ণশক্তি বা ডার্ক এনার্জিকে। এই শক্তির কারনেই বিশ্বের বস্তুকণাগুলো পরস্পর থেকে দূরে সরে যাওয়ার শক্তি পায়। আবার কৃষ্ণবস্তুই মূলত ছায়াপথগুলোকে একত্রে রাখে। এমনকি মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণার মধ্যকার আকর্ষণের কারনও হলো এই কৃষ্ণবস্তু।
ফার্নেস জানান, যদি ‘ডার্ক ফ্লুইডের’ ৯৫ শতাংশই একই ধরনের কণায় গঠিত হয় তবে তার মতে মহাবিশ্বের শূন্য জায়গাগুলো হয়তো এই ধরনের কণায় ভর্তি। যার কারণে বস্তুকণাগুলো পরস্পরকে আকর্ষণ-বিকর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, এই কণাগুলো কেবেল ছায়াপথগুলোকেই আটকে রাখে না বরং এরা আরো একই প্রকার কণার সৃষ্টি করে। ডার্ক এনার্জি এবং ডার্ক ম্যাটারকে কেবলমাত্র একটি বস্তুরূপে আনা হলেও তার ভর ঋণাত্মক হয়।
তবে সমস্যা হলো এই তরলের উপস্থিতির প্রমান মেলেনি। যদি ডার্ক ফ্লুাইড বাস্তবে প্রমান করা যায় তবে মহাবিশ্বের হারিয়ে যাওয়া ৯৫ ভাগ অংশের সন্ধান মিলবে। জবাব মিলবে হাজারো অজানা রহস্যের।