ব্যাংক থেকে লোপাট সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা : সিপিডি
রমজান আলী : দশ বছরে দেশের ব্যাংক খাত থেকে ভুয়া কাগজ পত্র দিয়ে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে আমাদের করণীয় কী?’ শীর্ষক সংলাপে এই তথ্য তুলে ধরে সিপিডি। এসময় সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে গেল এক দশকে ব্যাংক থেকে সাড়ে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি বেসরকারি ১৪টি ব্যাংকের মাধ্যমে এসব অর্থ লোপাট হয়েছে। সিপিডি জানায়, লাগামহীন খেলাপি ঋণ, যাচাই-বাছাই ছাড়া ঋণ অনুমোদন, ঋণ দেয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, ব্যাংকারদের পেশাদারিত্বের অভাবে চরম সংকটাপন্ন দেশের ব্যাংক খাত। এর মূল কারণ রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদন, পরিচালনা পরিষদে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের যুক্ত করা, পরিচালকদের দুর্বৃত্তায়ন, দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনা এবং সবশেষে ঋণ দেয়ায় সরাসরি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ।
এসব অনিয়ম ঠেকাতে ও ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালীকরণ, নতুন ব্যাংক অনুমোদন না দেয়া, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিচারিক ব্যবস্থাসহ জরুরি ভিত্তিতে পাঁচটি ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।
এছাড়া আরো বলেন, একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনি ইশতেহারে ব্যাংক খাতের বিষয় উল্লেখ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার গঠনের পর ব্যাংকিং খাতের ব্যাপারে তারা (রাজনৈতিক দলগুলো) কী ভূমিকা রাখবে তা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে।
এদিকে ব্যাংক খাতকে ঠিক করার জন্য সরকারকে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করার আহ্বানও জানিয়েছেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা নাহলে নাগরিক ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি ব্যাংকিং কমিশন গঠন না করা হয় তাহলে সিপিডি আগামী বছরের শুরুতে নাগরিক ব্যাংকিং কমিশন গঠন করবে।
অনুষ্ঠানের উপস্থিতিদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক ডেপুটি গভর্নন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ অন্যতম। সম্পাদনা : শাহীন চৌধুরী ও প্রিয়াংকা আচার্য্য