পিপিপির আওতায় চালু হচ্ছে কাদেরিয়া-আহমেদ বাওয়ানি টেক্সটাইল
সোহেল রহমান : পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর আওতায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত টেক্সটাইল মিল আধুনিকায়নের মাধ্যমে পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মিল দুটির একটি হচ্ছেÑ টঙ্গীর ‘কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল’ এবং অপরটি হচ্ছেÑ ডেমরার ‘আহমেদ বাওয়ানি টেক্সটাইল মিল’। মিল দুটি আধুনিকায়ন ও পুনরায় চালুর লক্ষ্যে অতি সম্প্রতি পিপিপি পার্টনার চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল’ আধুনিকায়ন ও পরিচালনার জন্য ওরিয়ন গ্রুপের ‘কনসোর্টিয়াম অব ওরিয়ন’ এবং ‘আহমেদ বাওয়ানি টেক্সটাইল মিল’ আধুনিকায়ন ও পরিচালনার জন্য ‘কনসোর্টিয়াম অব তানজিনা ফ্যাশন লিমিটেড’-কে মনোনিত করা হয়েছে।
জানা যায়, পিপিপি’র আওতায় টেক্সটাইল মিল দুটি আধুনিকায়নের মাধ্যমে পুনরায় চালু ও পরিচালনার জন্য ৩০ বছর মেয়াদে ‘কনসোর্টিয়াম অব ওরিয়ন’ ও ‘কনসোর্টিয়াম অব তানজিনা ফ্যাশন লিমিটেড’-এর সঙ্গে পৃথক পৃথক চুক্তি করা হবে। চুক্তি মূল্য বাবদ ‘কনসোর্টিয়াম অব ওরিয়ন’-এর কাছ থেকে প্রতিবছর ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং ‘কনসোর্টিয়াম অব তানজিনা ফ্যাশন লিমিটেড’-এর কাছ থেকে প্রতিবছর আড়াই কোটি টাকা পাবে সরকার।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, টঙ্গীর ‘কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল’টি ১৯৬১ সালে স্থাপিত হয় এবং ১৯৮০ সালে মিলটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। ‘বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশন’ (বিটিএমসি)-এর ব্যবস্থাপনায় ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত মিলটি চালুৃ ছিল এবং এরপর এটি বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে ‘আহমেদ বাওয়ানি টেক্সটাইল মিল’টি স্থাপিত হয় ১৯৫৪ সালে এবং ১৯৫৭ সালে মিলটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। এটিও বন্ধ হয়ে যায় ১৯৯৭ সালে। ‘যন্ত্রপাতি অত্যন্ত পুরাতন ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় বর্তমানে মিল দুটি বন্ধ আছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পিপিপি’র মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন গ্রীণ ফ্যাক্টরি হিসেবে মিল দুটি পুনরায় চালু হলে এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, উৎপাদনশীলতা বাড়বে ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জানা যায়, পিপিপি’র আওয়ায় মিল দুটি আধুনিকায়নের মাধ্যমে পুনরায় চালুর লক্ষ্যে পৃথক পৃথক দরপত্র আহবান করা হয়। প্রথমবার কারিগরি মূল্যায়নে উপযুক্ত দরদাতা না-পাওয়ায় দ্বিতীয় দফা দরপত্র আহবান করা হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয় দফায় টঙ্গীর ‘কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল’-এর জন্য তিনটি আবেদন জমা পড়ে। এরা হচ্ছেÑ ওরিয়ন গ্রুপের ‘কনসোর্টিয়াম অব ওরিয়ন’, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ‘প্রাণ ডেইরি লিমিটেড’ ও বেঙ্গল গ্রুপের ‘কনসোর্টিয়াম অব বেঙ্গল গ্রুপ’। কারিগরি মূল্যায়নে ‘কনসোর্টিয়াম অব ওরিয়ন’ ৬০-এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৮ দশমিক ৬১ নম্বর পেয়ে মনোনীত হয়।
অন্যদিকে দ্বিতীয় দফায় ডেমরার ‘আহমেদ বাওয়ানি টেক্সটাইল মিল’-এর জন্য দুটি আবেদন জমা পড়ে। এরা হচ্ছেÑ ‘কনসোর্টিয়াম অব তানজিনা ফ্যাশন লিমিটেড’ ও ‘কনসোর্টিয়াম অব মীর সিরামিকস’। কারিগরি মূল্যায়নে ‘কনসোর্টিয়াম অব তানজিনা ফ্যাশন লিমিটেড’ ৬০-এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৭ দশমিক ৮৯ নম্বর পেয়ে মনোনিত হয়। সম্পাদনা : ইকবাল খান