মাংসের পাশাপাশি জনপ্রিয় হচ্ছে টার্র্কির ডিম
ফাতেমা আহমেদ : উৎপাদন ব্যয় কম হওয়ায় এবং অল্প বিনিয়োগে কম সময়ে অধিক মুনাফার কারণে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে টার্র্কি পালন। মাংসের পাশাপাশি জনপ্রিয় হচ্ছে টার্কির ডিম। গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে বাড়িতেই টার্কির খামার করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। কালের কণ্ঠ অনলাইন
প্রাণী বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী কয়েক বছরেই দেশে ঘটবে টার্র্কি বিপ্লব। এতে বেকারত্ব দূর এবং দারিদ্র্য বিমোচন হওয়ার পাশাপাশি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় জোরালো অবস্থান করে নেবে সুস্বাদু টার্কির ডিম ও মাংস। টার্র্কিকে ঘিরে সম্ভাবনার নবদিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। খামারিরা জানান, টার্কি মুরগি মাত্র ৬ মাসে ডিম দেয়া শুরু করে। এক বছরেই একটি টার্কির ওজন হয় ১০-১২ কেজি। পুরুষ টার্র্কি ওজন ১৪ কেজি পর্যন্ত হয়। এ হিসাবে একটি ছাগল থেকে যে পরিমাণ মাংস পাওয়া যায় তার থেকেও বেশি মাংস পাওয়া যায় একটি টার্র্কি থেকে। টার্র্কি লালন-পালনে এক বছরেই পুঁজির দুই-তিন গুণ মুনাফা করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন খামারিরা।
দেশে আমিষের চাহিদা পূরণে অন্যতম প্রধান উৎস হয়ে উঠছে টার্কির সুস্বাদু মাংস। সাধারণত গরু, মুরগি এবং খাসির তুলনায় টার্কির মাংসে প্রোটিন বেশি এবং কোলেস্টেরল মুক্ত। স্বাস্থ্যসম্মত এবং সুস্বাদু হওয়ায় ধীরে ধীরে টার্কির মাংস জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে দেশে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টার্কির মাংস বেশ জনপ্রিয় ও দামি খাদ্য। আমাদের দেশেও অভিজাত রেস্টুরেন্ট কিংবা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে এখন টার্কির কদর বাড়ছে।
প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানান, রেড বারবন প্রজাতির এক জোড়া টার্কির দাম ৬০-৭০ হাজার টাকা। দেশেও এই প্রজাতির টার্র্কি লালন-পালন শুরু হয়েছে বেশ কয়েকটি জেলায়।
টার্কির জন্য কৃত্রিম খাবারের প্রয়োজন নেই। এ কারণে টার্কির খাবারের ব্যয়ও খুবই কম। সাধারণ প্রাকৃতিক সবুজ ঘাস ও লতা-পাতা এবং শাক-সবজি টার্কির পছন্দের খাবার। এ ছাড়া দানাদার খাবার রাখতে হবে।
চট্টগ্রামের টার্র্কি খামার এগ্রোকমের ব্যবস্থাপক মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘টার্কির ডিম ক্রেতা সাধারণের মধ্যে জনপ্রিয় করে তুলতে কম দামে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। আমরা এখন হাইব্রিড টার্র্কিও উৎপাদন করছি। একেকটি টার্কির ওজন ২০ কেজির ওপরে। টার্কির ডিম ও মাংস মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
টার্কির মাংস ও ডিমের গুণগত মান প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, ‘এ দেশের জন্য টার্র্কি নতুন এবং সম্ভাবনাময় একটি খাত। বিশ্বব্যাপী বয়লার টার্কির মাংস অভিজাত খাদ্য হিসেবে পরিচিত।’ সম্পাদনা : আনিস রহমান