ভরিতে স্বর্ণ আমদানিতে শুল্কহার ২ হাজার টাকা, কেনা-বেচায় ভ্যাট হার ৫ শতাংশ ও বৈধকরণে প্রতি ভরিতে ভ্যাট ১ হাজার টাকা সোনা আমদানি, কেনা-বেচা ও বৈধকরণে কর ও ভ্যাট হার চূড়ান্ত
সোহেল রহমান : বিদেশ থেকে বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানিতে এখন থেকে ভরিতে ২ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হবে। আর দেশের অভ্যন্তরে স্বর্ণ বা অলঙ্কার কেনা-বেচায় মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)-এর হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ শতাংশ। এছাড়া ইতোপূর্বে শুল্ক প্রদান ছাড়া যেসব স্বর্ণ দেশে আনা হয়েছে, সেসব স্বর্ণকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে বা বৈধ করতে হলে প্রতি ভরিতে ১ হাজার টাকা ভ্যাট দিতে হবে। এছাড়া ব্যাগেজ রুল্স-এর আওতায় মোট ২৩৪ গ্রাম স্বর্ণ আনা যাবে। এর মধ্যে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ বিনা শুল্কে আনা যাবে। এর অতিরিক্ত স্বর্ণের জন্য প্রতি ১১ দশমিক ৬৬ গ্রামের বিপরীতে ৩ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হবে। খুব শিগগিরই এ-সংক্রান্ত ঘোষণা দেবে সরকার।
গতকাল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে স্বর্ণ আমদানি ও অলঙ্কার রফতানিতে কর ও ভ্যাট সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে গঠিত কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে কমিটির সদস্যরা ছাড়াও ‘বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি’র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিদেশ থেকে স্বর্ণ আমদানি, দেশের অভ্যন্তরে স্বর্ণ বা অলঙ্কার কেনা-বেচা ও পূর্বের স্বর্ণের মজুদ বৈধকরণে যৌক্তিক কর ও ভ্যাট হার নির্ধারণ করা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার চালিয়ে আসছিলেন। এ-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে গত মাসে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে সরকার। বাণিজ্য সচিব-কে আহ্বায়ক করে গঠিত ওই কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের একজন করে প্রতিনিধি এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশর ব্যাংকের একজন করে প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
জানা যায়, দেশের অভ্যন্তরে স্বর্ণ বা অলঙ্কার কেনা-বেচায় ৩ শতাংশ ভ্যাট এবং পূর্বের স্বর্ণের মজুদ বৈধকরণে প্রতি ভরিতে ৫০০ টাকা ভ্যাট নির্ধারণের দাবি জানিয়েছিল ‘বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি’। কিন্তু কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা স্বর্ণ বা অলঙ্কার কেনা-বেচায় ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং পূর্বের স্বর্ণের মজুদ বৈধকরণে প্রতি ভরিতে ১০০০ টাকা ভ্যাট হার মেনে নিয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, পুর্বের মজুদকৃত স্বর্ণ বৈধ করতে স্বর্ণ মেলার আয়োজন করবে সরকার। এ সময় ব্যবসায়ী ছাড়া ব্যক্তি পর্যায়েও মজুদকৃত সকল স্বর্ণ ভরি প্রতি নির্ধারিত ১ হাজার টাকা ভ্যাট প্রদানের মাধ্যমে বৈধ করা যাবে। বৈধকরণের মেয়াদ থাকবে এক বছর পর্যন্ত।
বৈঠক শেষে ‘বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি’র সভাপতি জিসি মালাকার সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে সব কিছু চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং আলোচনার মাধ্যমে আমরাও এটি মেনে নিয়েছি।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বৈঠকে সব কিছু চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে ঘোষণা দেয়া হবে। তবে কর হার প্রসঙ্গে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
‘স্বর্ণ আমদানির শুল্ক হার ভারতের চেয়ে কম হওয়ায় তা পাচার হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাচার হওয়ার সম্ভাবনা নাই।’ উল্লেখ্য, ভারতে প্রতি ভরি স্বর্ণ আমদানিতে শুল্কহার ৩ হাজার ৬৩ রুপি বলে জানা যায়। সম্পাদনা : ইকবাল খান