আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ২
নির্বাচনে ১৬৮ থেকে ২২২ আসনে জিতবে আওয়ামী লীগ : জয়
ফাতেমা আহমেদ : প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গড়ে আওয়ামী লীগের ৬৬ শতাংশ এবং বিএনপির ১৯.৯ শতাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে। তিনি তার ফেসবুক পেজে একটি জরিপের ফলাফল তুলে ধরে বলেন, আগামী নির্বাচনে ২০০৮ সালের চেয়েও ভালো ফলাফল করবে আওয়ামী লীগ।
জয় লিখেছেন, ‘‘এই বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত আমরা এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় জাতীয় জনমত জরিপটি করাই। নিরপেক্ষ গবেষণা সংগঠন রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি) দ্বারা এই জরিপটি পরিচালনা করা হয়। এ বছরের মেয়র নির্বাচনের জরিপটিও এই সংগঠনটিই করেছিল। আপনাদের হয়তো মনে আছে আমার পেজ থেকে সেই জরিপটিও শেয়ার করি যার ফলাফল নির্বাচনের ফলাফলের সাথে মোটামুটি ভালোই মিলেছিল।
এই জরিপটির জন্য আমরা ৫১টি নির্বাচনী আসনের ৫১ হাজার নিবন্ধিত ভোটারের সাথে কথা বলি, অর্থাৎ প্রতি আসনে অন্তত ১ হাজার ভোটারের সাথে। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সকল নির্বাচনের ফলাফল আমলে নিয়েই এই ৫১টি আসন আমরা বৈজ্ঞানিকভাবে বেছে নিয়েছিলাম। এই আসনগুলোতে আমরা সবচেয়ে বেশি ভিন্ন ভিন্ন দলের জন্য ভোট দেয়ার প্রবণতা দেখতে পাই বা সাধারণত জয়ের পার্থক্য সবচেয়ে কম থাকে। অর্থাৎ, এই আসনগুলো নিয়েই আমাদের দল সবচেয়ে বেশি চিন্তিত ছিল।
যেহেতু জরিপটি মনোনয়ন প্রক্রিয়ার আগে করা হয়েছিলো, সেহেতু আমরা প্রার্থীদের ব্যাপারে জনমত জানতে পারিনি। কিন্তু দলগতভাবে, ৫১টি আসনেই আওয়ামী লীগ এগিয়ে আছে। ১২.২ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে কম ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনা জয়পুরহাট-১ আসনে আর ৭৫ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনা বরিশাল-৪ আসনে। যারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তাদের সবচেয়ে কম সংখ্যা দেখা যাচ্ছে টাঙ্গাইল-৩ আসনে, ২.৫ শতাংশ। এই আসনে আওয়ামী লীগের সাথে নিকটবর্তী দলের ব্যবধান ৪১.৫ শতাংশ। অন্যদিকে, ১৯.৮ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সিদ্ধান্তহীনদের সংখ্যা সাতক্ষীরা-৩ আসনে, যেখানেও আওয়ামী লীগের জয়লাভের ব্যবধান ৬৪.৭ শতাংশ।
গড়ে আওয়ামী লীগের জন্য সমর্থন ৬৬ শতাংশ মানুষের, বিএনপির জন্য ১৯.৯ শতাংশ আর ৮.৬ শতাংশ ভোটার সিদ্ধান্ত নেননি। যারা সিদ্ধান্ত নেননি তাদের থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থনের ব্যবধান অনেক বেশি। আরো গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হচ্ছে কোনো আসনেই আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির সমর্থনের পার্থক্য ১০ শতাংশের এর মধ্যে নেই। শুধু ২টি আসনেই আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির সমর্থনের পার্থক্য ২০ শতাংশ। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি জরিপকৃত আসনে, আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির সমর্থনের পার্থক্য ৫০ শতাংশের বেশি। সমর্থনের পার্থক্য ১০ শতাংশের এর বেশি হলেই দ্বিতীয় দলটির জন্য তা পার করা মোটামুটি অসম্ভব হয়ে যায়, আর ২০ শতাংশ এর বেশি পার্থক্য থাকলে একাধিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দ্বারাও তা টপকানো সম্ভব হয় না।’’
উল্লেখ্য, যে ৫১ আসনে জরিপ করা হয়েছে, সেগুলো হলো : দিনাজপুর-২ ও ৪, নীলফামারী ১ ও ৩, লালমনিরহাট ৩, গাইবান্ধা ২ ও ৩, জয়পুরহাট ১ ও ২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১, নওগাঁ ৫, রাজশাহী-৩ ও ৫, নাটোর ১, সিরাজগঞ্জ ৩, পাবনা ১, ২ ও ৪, চুয়াডাঙ্গা ১, ঝিনাইদহ ৩, যশোর ২, ৪, ৫ ও ৬, খুলনা ৬, সাতক্ষীরা ৩, বরগুনা ১, বরিশাল ৪ ও ৫, টাঙ্গাইল ৩ ও ৫, জামালপুর ৫, ময়মনসিংহ ৩, মানিকগঞ্জ ১ ও ৩, মুন্সিগঞ্জ ৩, ঢাকা ১৫, নরসিংদী ১, ফরিদপুর ১ ও ২, মৌলভীবাজার ৩, কুমিল্লা ৩ ও ৯, চাঁদপুর ৩, নোয়াখালী ১, চট্টগ্রাম ১০, ১২, ১৪ ও ১৬ এবং কক্সবাজার ৩।
জয় আরো বলেন, ‘‘এই ফলাফল গুলো বয়স ও লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে বের করা হয়েছে, তাই মোট ফলাফল সর্বক্ষেত্রে শতভাগ নয়। আসন অনুযায়ী ‘মার্জিন অফ এরর’ ৩ শতাংশ এবং আস্থা স্তর বা কনফিডেন্স লেভেল ৯৫%। সম্পূর্ণ ৫১ হাজার স্যাম্পল এর ‘মার্জিন অফ এরর’ ০ শতাংশ এবং আস্থা স্তর বা কনফিডেন্স লেভেল ৯৫%। এই জরিপগুলোর ওপর ভিত্তি করে এবং ১৯৯১-২০০৮ এর নির্বাচনের তথ্য বিশে�ষণ করার পর আমার বিশ্বাস যে, আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে ১৬৮ থেকে ২২২ টি আসনে জয়লাভ করবে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের চেয়েও বেশি ব্যবধানে এবার আওয়ামী লীগ জয়লাভ করবে।’’