আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ১
অবৈধ আর্থিক প্রবাহ ও কালো টাকা প্রতিরোধে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার চায় সিপিডি
কালো টাকাকে অর্থনীতির মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে ‘বেনামী সম্পদ বিল’ প্রণয়নের সুপারিশ
সোহেল রহমান : দেশে অবৈধ আর্থিক প্রবাহ ও কালো টাকা প্রতিরোধে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার থাকা উচিত বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ’ (সিপিডি)। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার ইস্যুগুলো নিয়ে সংস্থার সাম্প্রতিক এক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধ আর্থিক প্রবাহের কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশ প্রচুর পরিমাণ সম্পদ হারাচ্ছে। অবৈধ আর্থিক প্রবাহের মূল উৎস হচ্ছে ভুয়া ইনভয়েসিং। অবৈধ আর্থিক প্রবাহের ৮০ শতাংশই পাচার হয় এর মাধ্যমে। অবৈধ আর্থিক প্রবাহ প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-কে সমন্বিত নীতিমালা গ্রহণের পাশাপাশি এনবিআর-এর ‘ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল’-কে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করা এবং ভুয়া ইনভয়েসিং ও রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে বিচ্ছিন্ন বাণিজ্য তথ্যের পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদী ডাটা পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। আর এজন্য রাজস্ব বোর্ডের আর্থিক ও কারিগরি সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি জনবলের দক্ষতা বাড়াতে হবে।
অন্যদিকে ‘কালো’ টাকা সংক্রান্ত সমস্যা মোকাবিলায় বা কালো টাকাকে অর্থনীতির মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে একটি ‘বেনামী সম্পদ বিল’ প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সিপিডি।
প্রসঙ্গতঃ অর্থনীতিবিদের মতে, প্রতিবছর দেশের অর্থনীতিতে ৭০ হাজার কোটি কালো টাকা যুক্ত হচ্ছে। বেশ আগে একটি বিদেশি সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে কালো টাকার পরিমাণ জিডিপি’র ৩৭ শতাংশ। পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক হিসাব মতে, দেশে কালো টাকার পরিমাণ জিডিপি’র ৪২ শতাংশ থেকে ৮২ শতাংশ। তবে কালো টাকার কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি সরকারের আমলেই কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় খুব বেশি সাড়া মেলেনি।
গত ২০১২-১৩ অর্থবছরে জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করার স্থায়ী বিধান তৈরি করা হয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ (ই) ধারা অনুযায়ী, অতীতের যে কোনো বছরের আয় গোপন করা হয়ে থাকলে তা প্রদর্শন করা যাবে। যে বছরে ওই আয় করা হয়েছিলো, সেই বছরের বিদ্যমান আয়ের কর হার প্রযোজ্য হবে। এর সঙ্গে যোগ করা হবে প্রদত্ত করের ওপর ১০ শতাংশ হারে জরিমানা। সংযোজিত নতুন ধারায় পুরানো একাধিক বছরের কালো টাকা সাদা করারও সুযোগ রয়েছে। এজন্য বার্ষিক আয়কর বিবরণীর সঙ্গে পৃথক ফরমে নাম, কোন্ খাতের আয় ও পরিমাণ এবং কর ও জরিমানার পরিমাণ ঘোষণা করতে হবে।
তবে তিনটি ক্ষেত্রে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ পাওয়া যাবে না। প্রথমতঃ কোনো করদাতার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট করবর্ষের আয় গোপনের অভিযোগে নোটিশ করা হলে বা পুনঃমামলা উন্মোচন করা হলে;
দ্বিতীয়ত: কোনো করদাতার ব্যাংক হিসাব তল্লাশির জন্য চিঠি দেওয়া হলে এবং তৃতীয়ত: করদাতা নামে আয় গোপনের অভিযোগে কোনো মামলা চলমান থাকলে। সম্পাদনা : ইকবাল খান