বিভিন্ন ছোট দেশ এবং তাদের শক্তিশালী অর্থনীতি
মোহাম্মদ রকিব
৫. সান-ম্যারিনো : পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ সান-ম্যারিনো। অ্যাপেনাইন পর্বতের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত এই দেশ ইউরোপের সবচেয়ে পুরোনো গণরাজ্য বলে পরিচিত। অনেকেই একে ‘টাইটানিক রিপাবলিক’ বলে ডেকে থাকে। ইউরোপ মহাদেশের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম এই দেশের আছুন মাত্র ৬১ বর্গকিলোমিটার, যার চারদিকে রয়েছে ইণালি। এর মোট জনসংখ্যা ৩৩ হাজার আর মাথাপিছু আয়ের হিসাবে এটি ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ। এর র্বুমান মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ প্রায় ৫৯ হাজার ৫০০ ডলার। দেশটিতে বেকারত্ব নেই বললেই চলে। সান-ম্যারিনো পৃথিবীতে শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে পরিচিত।
৬. লিচটেনস্টেইন : প্রাকৃতিক সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্তে¡ও একটি দেশ যে বিশ্বের অন্যতম ধনী হয়ে উঠতে পারে, তার উদাহরণ লিচটেনস্টেইন। ২০০৮ সালে এ দেশের রাজা বিশ্বের অষ্টম ধনী রাজার মর্যাদা পেয়েছিলেন। তখন তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার! অথচ এই ‘ল্যান্ডলক’ দেশটি বিশ্বের ষষ্ঠ ক্ষুদ্রতম এবং ইউরোপের চতুর্থ ক্ষুদ্রতম দেশ। এ দেশের নাগরিকেরা জীবনযাত্রার মানের ক্ষেত্র বিশ্বের সর্বোচ্চ মান উপভোগ করে থাকেন। লিচটেনস্টেইন পৃথিবীর অল্প কয়েকটি দেশের অন্যতম, যাদের জনসংখ্যার চেয়ে বেশি নিবন্ধিত কোম্পানি রয়েছে! এ দেশের রয়েছে কার্যকরী ও শক্তিশালী একটি অর্থনৈতিক সেবা সেক্টর।
৭. মার্শাল আইল্যান্ড : পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপদেশ মার্শাল আইল্যান্ড। ১৭৮৮ সালে এই দ্বীপে এসেছিলেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী জন মার্শাল। তাঁর নাম অনুসারে এই দ্বীপের নাম হয় মার্শাল আইল্যান্ড। ১৯৪৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন থেকে এর সুরক্ষার দায়িত্বে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর মোট আছুন মাত্র ১৮১ দশমিক ৩ বর্গকিলোমিটার এবং এর মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার। এই দেশের রাজধানীর নাম হলো মাজুরো এবং এখানকার প্রচলিু মুদ্রা হচ্ছে ইউএস ডলার। ছোট এই দেশের মাথাপিছু আয় মাত্র ৪ হাজার ৪০ ডলার। ১৯৪২ সালে গঠিত এই দ্বীপপুঞ্জের বেশির ভাগ মানুষই মার্শালিজ বংশোদ্ভ‚ত। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফিলিপাইন এবং অন্যান্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের অল্পসংখ্যক অভিবাসী রয়েছেন মার্শাল আইল্যান্ডে। ঐতিহাসিকভাবে এই দ্বীপের বাসিন্দারা ‘জোলেট জেন আঞ্জ’ বা ঈশ্বরের উপহার হিসেবে পরিচিত।
৮. সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস : আপনি যদি বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ কোটি সাড়ে ১২ লাখ টাকা বা ২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এখানকার চিনিকলে বিনিয়োগ করেন অথবা ৪ লাখ ডলার বা আনুমানিক ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার জমি কেনেন, তাহলে ছবির মতো সুন্দর সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস নামের দেশটিতে নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অষ্টম স্থানে থাকা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের এই দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ উৎস এই ইকোনমিক নাগরিকত্ব প্রোগ্রাম। সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের অন্য নাম ফেডারেশন অব সেন্ট ক্রিস্টোফার অ্যান্ড নেভিস। পৃথিবীর পশ্চিম গোলার্ধের সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত এই দেশ ম‚লু দুই ক্যারিবিয়ান দ্বীপ সেন্ট কিটস এবং নেভিসের সমন্বয়ে গঠিত।
এর মোট আছুন মাত্র ২৬১ বর্গকিলোমিটার এবং এর মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার। দেশটির মাথাপিছু আয় প্রায় ২৬ হাজার ৮০০ ডলার।