বঙ্গবন্ধুর চিঠি আর স্বামীর জুতা আঁকড়ে ৪৮ বছর পার করেছেন পটুয়াখালীর বাসন্তী
বিশেষ প্রতিনিধি : বঙ্গবন্ধুর দেয়া একখানা চিঠি আর স্বামীর এক জোড়া জুতাকে অবলম্বন করে বাসন্তী রানী দাস (৭৫) কাটিয়েছেন ৪৮টি বছর। এ স্মৃতির মাঝে তিনি খুঁজে পান বঙ্গবন্ধুর হাতের স্পর্শ। দেখতে পান স্বামী আর স্বাধীনতার প্রিয় মুখ। বাসন্তী রানীর বাড়ি গলাচিপার চিকনিকান্দী বন্দরে। স্বামী শান্তি রঞ্জন দাস ছিলেন এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে সহায়তা করেছেন তিনি। এসবই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার অপরাধে হানাদার আর রাজাকাররা হত্যা করে শান্তি রঞ্জনকে। বাসন্তী রানী জানান, একাত্তরে হানাদার বাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় চিকনিকান্দী বন্দরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। পাঁচ সন্তানের এই জননী তখন অন্তসত্ত্বা। রাজাকাররা শান্তি রঞ্জনকে ধরে নিয়ে যায় পাক বাহিনীর কাছে। তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। তিন দিন ধরে শান্তি রঞ্জনের ওপর চলে অবর্ণনীয় নির্যাতন। তাকে চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তার শরীরের মোট ৮৭টি স্থানে পোচ দেয়া হয়েছিল। তিনি আরো জানান, নির্যাতনে মৃত্যুর পর রাজাকাররা তার স্বামীর লাশ নদীতে ফেলে দেয়। লাশটি নদীর জলে ভেসে বেড়িয়েছিল। কেউ সৎকার করতে সাহস পায়নি। স্বাধীনতার কয়েক মাস পর বাসন্তী রানী বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর করা একটি চিঠি ও দুই হাজার টাকা পেয়েছিলেন। যে চিঠিতে বঙ্গবন্ধু শ্রদ্ধার সঙ্গে তার স্বামীর আত্মত্যাগে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। সম্পাদনা : আবদুল্লাহ