[১]মানুষ হয়ে জন্ম নিয়েও সে জানে না মানুষ দেখতে কী রকম!
আক্তারুজ্জামান : [২] ছোট্ট একটা বাক্য অথচ কত গভীর! লেখাটা আমি পেয়েছিলাম ফেসবুকের জনপ্রিয় একটি পেজ ‘অনিকেত প্রান্তর, নো ম্যানস ল্যান্ড’ থেকে। সেখানে উপোরোক্ত বাক্যটির আগে লেখা ছিলো- আয়নার সামনে দাঁড়ালেই নিজেকে দেখতে পাই বলে স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা। নিজেই নিজের কাছে ¯্রষ্টার মতো অদেখা। মানুষ হয়ে জন্মগ্রহণ করেও সে জানে না মানুষ দেখতে কী রকম! পৃথিবীর কোনো এক মায়ের ওই সন্তানটি ছিলো জন্মান্ধ!
[৩] আসলেই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যস্ততার ফাঁদে পড়ে এরকমভাবে ভাবার সময় পায় না। কত শত মানুষ আমাদের অতিক্রম করে যাচ্ছে। কত শতকে আমরা অতিক্রম করছি। কিন্তু কার খোঁজ কখন রেখেছি? রাখিনি। নিজেকেই ঠিকঠাক সময় দেয়া হয়ে ওঠেনি। উঠলে হয়তো এই ভাবনা আমার মাথা থেকেই আসতো। কিন্তু আসিনি।
[৪] পৃথিবীতে লাখো মানুষ বেঁচে আছে যারা আকাশের নামই শুনেছে কিন্তু আকাশের রূপ দেখিনি। তারা দেখেনি ফুল কেমন। পাখিগুলোর উড়ে যাওয়া মনোরম দৃশ্য সে কল্পনাও করতে পারিনি। আর সবচেয়ে দুঃখের বিষয় সে নিজে দেখতে কেমন এটাও জানে না! এর চেয়ে দুঃখের আর কি হতে পারে। অথচ সবকিছু থাকা সত্ত্বেও আমি কত অকৃতজ্ঞ।
ছোট্ট একটা চাওয়া পূরণ হয়নি বলে বেঁচে থাকাটাই মাঝে মাঝে অযৌক্তিক মনে হয়। কিন্তু সেই ছেলেটি, যার নিজের মুখটাও দেখার সৌভাগ্য হয়নি তার দুঃখের কাছে আমার অপ্রাপ্তি একেবারেই ফেলনা। এ যেনো ¯্রষ্টারই আরেক প্রতিচ্ছবি। আমি যেমন ¯্রষ্টার খুব কাছে থেকেও ¯্রষ্টাকে দেখতে পারি না। মায়ের ওই সন্তানটিও নিজেকে দেখে না! তাই বারবার আয়নার সামনে গেলেই ¯্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতায় মাথা অবনত হয়ে আসে। নিজের অবয়বটি দেখতে পায় বলে।