পল্লী এলাকার চেয়ে শহরে বয়স্ক শিক্ষার হার ২০ দশমিক ২ শতাংশ বেশি
সাইদ রিপন : গত পাঁচ বছরে দেশে সাক্ষরতার হার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমান সময়ে জাতীয়ভাবে দেশে মোট সাক্ষরতার হার বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মহিলা ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ। একই সময়ে পল্লী এলাকায় মোট ৬৯ দশমিক ১ শতাংশ। পল্লী এলাকায় পুরুষ ৭১ শতাংশ ৫ শতাংশ এবং মহিলা ৬৬ দশমিক ৭ শতাংশ। অন্যদিকে শহরে মোট ৮১ দশমিক শূন্য শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং মহিলা ৭৯ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৫ সালে দেশে সাক্ষরতার হার ছিল ৬৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এর মধ্যে ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনসংখ্যার শিক্ষার হার ছিল ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস্ ২০১৯ প্রকাশ করেছে। ঐ রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ২০১৯ সালে মোট ২ হাজার ১২টি নমুনা এলাকা থেকে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রিপোর্টটি প্রস্তুত করা হয়েছে। নমুনা এলাকায় মোট ২ লাখ ৯৮ হাজার ৮১০টি খানার ওপর জরিপ পরিচালনা করেছে বিবিএস।
বিবিএস এর রিপোর্ট অনুযায়ি বয়স্ক শিক্ষার ক্ষেত্রে (১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব) শহর এলাকায় বয়স্ক শিক্ষার হার পল্লী এলকার চেয়ে প্রায় ২০ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। ৭ বছর বা তার বেশি বয়ষ্ক শিক্ষার ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ১৭ দশমিক ২ শতাংশ। পল্লী এলাকায় ৭ বছর ও ১৫ বছর এর বেশি উভয় ক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে শিক্ষার হার বাড়ছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনসংখ্যার শিক্ষার হার জাতীয়ভাবে মোট হয়েছে ৭৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৪ শতাংশ এবং মহিলা ৭১ দশমিক ৯ শতাংশ। পল্লী এলাকায় মোট ৬৮ দশমিক ৪ শতাংশ। পল্লী এলাকায় পুরুষ ৭১ দশমিক ৪ শতাংশ এবং মহিলা ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে শহরে মোট ৮২ দশমিক ২ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মহিলা ৭৯ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ২০০৯ সালে দেশে সাক্ষরতার হার ছিল ৫২ শতাংশ। চার বছর পর ২০১৩ সালে ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে তা ৭১ শতাংশ হয়। এর পর থেকেই এ হার বাড়ছে। মন্ত্রণালয়ের দাবি ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার সময় সাক্ষরতার হার ছিল ৬১ শতাংশ। পরে চারদলীয় জোট সরকারের পাঁচ বছর এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরে সাক্ষরতার হার নিম্নগামী হয়ে পড়ে।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) দ্বিতীয় টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) : বাংলাদেশ অগ্রগতি প্রতিবেদন ২০২০ প্রকাশ করেছে। জিইডির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে মানসম্মত শিক্ষায় আনুষ্ঠানিক অংশগ্রহণের হার ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ যা ২০১৫ সালে ছিল মাত্র ৩৯ শতাংশ। জিইডি বলছে, মানসম্মত শিক্ষার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারি বিনিয়োগের অপর্যাপ্ততা রয়েছে। পেশাগত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পর্যাপ্ত দখল ও জ্ঞান বিতরণের দক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষকেরও সংকট রয়েছে। এজন্য শিক্ষার গুণগত মান, শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন সরকারি সেবার বিকেন্দ্রীকরণ, অবকাঠামোভিত্তিক ও অর্থনৈতিক অসমতা দূর করতে হবে। শিক্ষার মান বাড়াতে ভবিষ্যত করণীয় বিষয়ে জিইডি বলেছে, শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিতে হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তির অনুপাত বৃদ্ধি করে, প্রান্তিক শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনা জরুরি। এছাড়া শিক্ষায় আইসিটির ব্যবহার এবং শিক্ষাখাতে সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। রেজা