ওয়েবসাইট ও ট্রেডিং সিস্টেমের ত্রুটির পর এবার সাইবার হামলার আশঙ্কা করছে ডিএসই
মো. আখতারুজ্জামান : ডিএসইর মোবাইল অ্যাপভিত্তিক লেনদেন প্লাটফর্ম ডিএসই মোবাইল রাত ৮ থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মোবাইল অ্যাপে এভাবেই লেনদেন চলবে। রোববার ডিএসই কর্তৃপক্ষের নেয়া এ সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, দেশের পুঁজিবাজার যখন চাঙ্গা হচ্ছে তখন একের পর এক হুমকি আসছে। যা বাজারের বিনিয়োগকারিদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারিরা।
জানা যায়, গত ১৯ আগস্ট ডিএসইর ওয়েবসাইট ও ট্রেডিং সিস্টেমে ত্রুটি দেখা দেয়ায় লেনদেনে বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয়। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ২৪ আগস্ট পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি রোববার তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রকিবুর রহমান জানান, বিনিয়োগকারিদের আর্থিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রাতে মোবাইল অ্যাপভিত্তিক লেনদেন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হলে সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। নিজেদের সক্ষমতা না বাড়লে বাজার বাড়বে না। এক্সচেঞ্জের প্রত্যেকটা অ্যাপ শক্তিশালী করতে হবে। তবে হতাশার বিষয় হচ্ছে, ডিএসইর আইটি বিভাগ অনেক দুর্বল। বিএসইসির তদন্ত কমিটি রোববার যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, তাতে বিষয়টি উঠে এসেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্য আসে, বিগল বয়েজ নামে উত্তর কোরিয়ার একটি হ্যাকার গ্রুপ দেশের ব্যাংকগুলোতে সাইবার হামলা চালাতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ আগস্ট ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আরোপ করা হয় বাড়তি সতর্কতা, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো ব্যাংক রাত ১০টা, কোনো ব্যাংক ১১টা আবার কোনো কোনো ব্যাংক রাত ১২টা থেকে সকাল ৭টা অথবা ৬টা পর্যন্ত তাদের এটিএম সেবা বন্ধ রাখছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলেও ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে সুইফট নেটওয়ার্ক বন্ধ আছে, এই কথা বলে প্রকৃত কোম্পানির ছদ্মবেশ ধরে একই নাম, ওয়েবসাইট, ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করছে প্রতারকরা।
গত এপ্রিলেও একটি বেসরকারি ব্যাংকে তাদের করেসপনডেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর অনুরোধ করে ভুয়া চিঠি পাঠানো হয়। তবে ব্যাংক সতর্ক থাকায় বিষয়টি ভেরিফাই করে নিশ্চিত হয় যে, চিঠি পাঠানোর বার্তা ছিল ভুয়া। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউকে অবহিত করা হয়। তখন বিএফআইইউ থেকে করোনা প্রাদুর্ভাবের সুযোগে প্রতারণামূলক কার্যক্রমের বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে চিঠি পাঠানো হয়েছিলো। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব