সেপ্টেম্বরের প্রথম ১০ দিনেই রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার
মো. আখতারুজ্জামান : কোভিড-১৯ মহামারিতে দেশের অর্থনীতির সব চাকা ধীর গতি হলেও শুরু থেকে গতিশীল ছিলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১০ দিনে যে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা তা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিরা থাকলেও দেশে মোট রেমিট্যান্স আহরণে অর্ধেকই এসেছে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাত থেকে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ৪৫৬ কোটি ২১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এর মধ্যে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, যা মোট অংকের ৪৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
করোনার কারণে বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা কাজ হারিয়েছে। এর মধ্যে অনেকে দেশে ফিরে এসেছেন। ফলে গত এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স কমেছিল। তবে আবার তা বাড়তে শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বরাবরই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে। দেশটি থেকে দুই মাসে এসেছে ১০৮ কোটি ৩২ লাখ ডলার বা মোট রেমিট্যান্সের প্রায় ২৪ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি থেকে এসেছে ৫৬ কোটি ৩৩ লাখ ডলার এবং তৃতীয় অবস্থানে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে প্রায় ৫২ কোটি ডলার।
এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৮ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। ধারণা করা হয়েছিল প্রবাসী আয় কমে যেতে পারে। মে মাস থেকেই তা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫০ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এরপর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৬০ কোটি ডলার, যা ছিল একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। তার আগে জুনে মাসে এসেছিল ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। আর আগস্ট মাসে ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ১ কোটির বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছে। দেশের জিডিপিতে তাদের পাঠানো এ রেমিট্যান্সের অবদান প্রায় ১২ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বোশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১০ দিনে ৯২ কোটি ২০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। গত বছরের এই ১০ দিনে রেমিট্যান্স এসেছিল ৫৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ রেমিট্যান্সে ভর করেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।