এবারও হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলো ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী বললেন, অফিসিয়ালি এখনও জানি না
মো. আখতারুজ্জামান : গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সোমবার সকাল থেকে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ রয়েছে। গতবছর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ার পর দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে এর দাম। সেই সময় ৩০-৪০ টাকা প্রতিকেজি মূল্যের এ পণ্যটির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩০০ টাকা। এবারও ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে পেঁয়াজের দাম। সোমবার খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে।
জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমরা এখনও জানি না। ভারত আমাদের দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, এটা আমরা শুনছি। তবে অফিসিয়ালি আমরা কিছু জানি না। আমরা এখন বিষয়টা চেক করছি। আজ (সোমবার) মনে হয় ভারত এ বিষয়ে নিজেদের করণীয় ঠিক করতে বৈঠকে বসেছে। হয়তো রপ্তানির মূল্য পরিবর্তন না-কী করবে, দেখা যাক। ভারতের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি।
তিনি বলেন, ভারত বন্ধ করে দিলে সমস্যা একটু হবে। আমরা বিকল্প মার্কেট হিসেবে অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করব। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি আমরা অন্যান্য দেশ থেকে চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ আমদানি করতে পারব।
মন্ত্রী বলেন, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ব্যবসায়ী ফায়দা লুটতে না পারে সে জন্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের থেকে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের কয়েকজন পেঁয়াজ আমদানিকারক জানান, কিছুক্ষণ আগে ভারতীয় রপ্তাানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট আমাদের জানিয়েছেন যে, ভারত কোনও পেঁয়াজ রফতানি করবে না। এ বিষয়ে কোন চিঠি না দিলেও ভারতীয় কাষ্টমসের নিষেধ থাকায় সকাল থেকে পণ্যটি আমদানি বন্ধ রয়েছে। তারা জানান, আমাদের অনেক আমদানিকারকের বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলা রয়েছে। আমরাতো এখন বিপাকের মধ্যে পড়ে গেছি। আমরা তাদেরকে বলছি, আমাদের যেসব এলসি খোলা রয়েছে সেগুলো রপ্তানি করুন। আমাদের অনেক এলসির বিপরীতে অনেক ট্রাক মাল নিয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এখন যদি তারা পেঁয়াজ না দেয় তাহলে আমাদের এই সব পেঁয়াজের কী অবস্থা হবে সেই চিন্তায় আছি।
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ভারতীয় কাস্টমসের সাথে কথা হয়েছে সরকারি নির্দেশনা থাকায় পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, চলমান কোভিড মহামারি ও বন্যা পরিস্থিতিতে ভোক্তাদের জন্য রোববার থেকে সাশ্রয়ীমূল্যে সারাদেশে পণ্য বিক্রি শুরু করছে টিসিবি। টিসিবির ট্রাক থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাওয়া যাবে ৩০ টাকায়, যা একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই কেজি কিনতে পারবেন। এছাড়া প্রতি কেজি চিনি পাওয়া যাবে ৫০ টাকায়, যা একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই কেজি কিনতে পারবেন। মসুর ডাল ৫০ টাকা কেজিতে একজন ক্রেতা সার্বোচ্চ দুই কেজি নিতে পারবেন। এছাড়াও সয়াবিন তেল ৮০ টাকা লিটারে একজন ক্রেতা দুই থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ লিটার নিতে পারবেন। দেশব্যাপী ২৭৫ জন ডিলারের ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এ বিক্রয় কার্যক্রম চলছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব