বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হচ্ছে, জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ : এডিবি
নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা মহামারির ধাক্কা সামলেও অর্থবছর শেষে উৎপাদন খাতের উন্নতি ও শক্তিশালী রফতানির কারণে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) তাদের আউটলুক ২০২০-এর হালনাগাদ সংস্করণে এ পূর্বাভাস দিয়েছে। মঙ্গলবার এডিবির সদর দফতর থেকে এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। পরে সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয় থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এর আগে, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ কয়েক মাসে করোনাভাইরাসের অভিঘাত সত্ত্বেও সরকারি হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের বাজেটে এই অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হচ্ছে। একটি শক্তিশালী উৎপাদন ভিত্তি এবং রফতানি শক্তিশালী হয়ে ওঠায় এমন প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পার। বুদ্ধিদীপ্ত সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং সরকারের প্রণোদনা ব্যবস্থার দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশিত পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে মহামারিটি বাংলাদেশে বা যেসব দেশে বাংলাদেশ পণ্য রফতানি করে, সেসব দেশে যদি স্থায়ী হয়, তাহলে প্রবৃদ্ধি অর্জনও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, মহামারি থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য ও মহামারি পরিচালন ব্যবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্য চাপ সত্ত্বেও সরকার গরিব ও দুঃস্থদের জন্য মৌলিক সেবা ও পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে উপযুক্ত অর্থনৈতিক উদ্দীপনা এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাসহ অর্থনীতিকে সুসংহত করেছে। এর সঙ্গে রফতানি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বিদেশি তহবিল সুরক্ষাসহ সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ফলে এই পুনরুদ্ধার সম্ভব হচ্ছে। মনমোহন প্রকাশ বলেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বজায় রাখতে ভ্যাকসিনের প্রাথমিক প্রাপ্তি এবং স্বাস্থ্য মহামারি ব্যবস্থাপনার ওপর ক্রমাগতভাবে জোর দিতে হবে। তাছাড়া সম্পদ সুসংহতকরণ, রফতানি বৈচিত্রায়ন, উৎপাদনশীল খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতে আরও সংস্কার করার প্রয়োজন রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছর (২০২০-২১) দেশের মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়াতে পারে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে। ক্ষেত্রে ব্যাপক ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য মূল্য কম থাকা এবং দেশের সাধারণ ক্রেতাদের সাবধরনে কেনাকাটার প্রভাব পড়বে। কোভিড-১৯ মহামারির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এরই মধ্যে এডিবি ৬০ কোটি ডলারের ঋণ এবং ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে আরও ৫ দশমিক ২ বিলিয়ম ঋণ সহায়তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।