
আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ১
অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রথম বছরে প্রয়োজন হবে ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা

সোহেল রহমান : চলতি বছর থেকেই ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের কাজ শুরু হচ্ছে। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট হচ্ছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রথম বাজেট। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রথম বছরে সরকারের মোট প্রয়োজন হবে ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি খাত থেকে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ লাখ ৩০ হাজার ১২০ কোটি টাকা। এটি মোট চাহিদার ১৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ। চাহিদার অবশিষ্ট অর্থের মধ্যে ৪৫ লাখ ১৮ হাজার ২৭০ কোটি টাকা যোগান দেবে অভ্যন্তরীণ বেসরকারি খাত (৬৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ) এবং ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে (১১ দশমিক ৫১ শতাংশ)।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫)’ বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে কর-জিডিপি অনুপাত হচ্ছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। আগামী ২০২৫ সাল নাগাদ এ হার ১২ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কর-জিডিপি অনুপাতের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। কিন্তু এটি অর্জিত হয়নি। কর-জিডিপি অনুপাতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় রাজস্ব আয় বাড়ানো ও বাণিজ্য শুল্কের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে রাজস্ব আইনের অধিকতর সংস্কার, কর প্রশাসন আধুনিকায়ন ও শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব’ (পিপিপি)-এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কর সংস্কারের লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়নি।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রমতে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ (এসডিজি)-এর বাস্তবায়ন ও কর্মসংস্থানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া শ্রমবাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সম-অধিকার নিশ্চিত করা, আয় বৈষম্য কমিয়ে আনা, সমন্বিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি মোকাবেলা ও টেকসই নগরায়ন ইত্যাদি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নতুন কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ লাখ ৫০ হাজার। আলোচ্য সময়ে শ্রম বাজারে নতুন শ্রমশক্তি যোগ হবে ৭৮ লাখ ১০ হাজার। গত সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রার ৭৩ দশমিক ৬ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। পরিকল্পনায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ কোটি ২৯ লাখ। এর মধ্যে ১ কোটি ৯ লাখ অভ্যন্তরীণ এবং অবশিষ্ট ২০ লাখ আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে। এর বিপরীতে মোট কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ৯৫ লাখ।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ’ (সিপিডি)-এর মতে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ প্রয়োজন। উচ্চ প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও নিম্নতর কর্মসংস্থান হার এটাই প্রমাণ করে যে, অধিকাংশ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে প্রবৃদ্ধি হলেও তা কাক্সিক্ষত কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে।
