• প্রচ্ছদ
  • আমার দেশ
  • আমাদের বিশ্ব
  • খেলা
  • ইসলামি চিন্তা
  • অমৃত কথা
  • বিনোদন
  • আজকের পএিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
  • নগর সংস্করণ
  • মিনি কলাম
  • খ্রিস্টীয় দর্পণ
  • প্রবারণা পূর্ণিমা

শেষ পাতা

ফসলের পেস্ট রিক্স এনালাইসিস পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে

প্রকাশের সময় : January 14, 2021, 12:00 am

আপডেট সময় : January 13, 2021 at 9:27 pm

মতিনুজ্জামান মিটু : শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ জানান, খুলনা বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলায় গমের জমিতে অতি ক্ষতিকর ব্লাস্ট নামের একটি নতুন ছত্রাকজনিত রোগ দেখা দেয়, যার আক্রমণে ওই এলাকার অধিকাংশ ফসল বিনষ্ট হয়ে যায়। ১৯৮৫ সালে এ রোগটি সর্বপ্রথম ব্রাজিলে দেখা দেয় । এরপর এটি দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ আমেরিকার বাইরে বাংলাদেশেই এ ভয়াবহ রোগটি সর্বপ্রথম সংক্রমিত হয়। এ রোগের জীবাণু বীজ ও বাতাস বাহিত। এ রোগের জীবাণু বাতাসের মাধ্যমে এ দেশে আসার সম্ভাবনা ছিলো না। বরং বীজ কিংবা খাদ্যশস্যের মাধ্যমে রোগের জীবাণু দেশে প্রবেশ করে থাকতে পারে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রতিয়মান হয়, বাংলাদেশে সংক্রমিত ব্লাস্ট রোগের ছত্রাক ব্রাজিলের ছত্রাকের অনুরূপ। উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কার্যক্রমের দুর্বলতার কারণে গমের ওই ভয়ংকর রোগটি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট গবেষক ও উদ্ভিদ রোগতত্ত্ববিদদের ধারণা। গমের ব্লাস্ট রোগটি এতটাই ভয়াবহ, যেকোনো বালাইনাশক দিয়ে একে দমন করা সম্ভব হয় না। এমনকি এ রোগের কোনো প্রতিরোধক জাতও এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। সাধারণত কোনো এলাকায় আক্রমণ দেখা দিলে প্রায় শতভাগ ফসল বিনষ্ট হয়। গত বেশ কয়েকবছর ধরে সারাদেশে জায়ান্ট মিলিবাগ এর আক্রমন সম্পর্কে এদেশের প্রায় সবাই অবহিত এবং আতংকিত। ফল-ফসল ও উদ্ভিদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এ পোকাটিও এ দেশের নয়। আফ্রিকায় এ পোকাটির উৎপত্তি হলেও গত কয়েক দশক ধরে এটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কারো কারো মতে বাংলাদেশে এ পোকাটি এসেছে আফ্রিকা বা ভারত কিংবা পাকিস্থান থেকে। এই ক্ষতিকর পোকাটির দেহের বাহিরে কীটনাশক প্রতিরোধী মোমের আবরণ থাকায় কোনো কীটনাশক দিয়ে একে মারা যায় না। আবার বছরের অধিকাংশ সময় পোকাগুলো মাটির নিচে থাকায় এদের সহজে দমন করা যায়না। দেশের বাহির থেকে আসা বেশ বড় আকারের পাখাবিহীন এ পোকটি অতি অল্পসময়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে পার্থেনিয়াম নামের অতি ক্ষতিকর আগাছার উপদ্রব লক্ষ্য করা যায়। আগাছাটির উপস্থিতি ফসল, গবাদীপশু ও মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি একদিকে যেমন ফসলের ক্ষতি করে, তেমনি আবার গবাদিপশু ও মানবদেহে শ্বাসনালীর এলার্জি সৃষ্টি করে থাকে। অতি মাত্রায় এলিলোপ্যাথিক ক্রীয়া’র কারণে এই আগাছাটি ফসলের জমিতে মারাত্মক ফসলহানী ঘটায়। আবার এটি সহজে দমনও করা যায়না। একক পদ্ধতিতে দমন করা যায়না তাই একে নিয়ন্ত্রণে রাখাও বেশ ব্যায়বহুল ও কষ্টসাধ্য। এই আগাছাটিকে বিশ্বে ফসল ও জৈববৈচিত্রের জন্য বড় হুমকী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেহেতু সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে এই আগাছার আক্রমণ প্রথম দেখা দেয়, তাই ধারণা করা হয় পাশ্ববর্তী দেশ থেকে বাংলাদেশে এই আগাছার অনুপ্রবেশ ঘটে।
দেশে অনুপ্রবেশ করা রোগজীবাণু, পোকামাকড় বা আগাছা’র মধ্যে ওই তিনটিকে সর্বাধিক ক্ষতিকর এবং দেশের আগামীর কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বড় ধরণের হুমকী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়াও বর্তমানে দেশে ফসলের জমিতে বেশ কয়েক ধরনের ক্ষতিকর শামুকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যেগুলোর সঙ্গে আফ্রিকার শামুকের মিল রয়েছে। এগুলোও ফসলের জন্য ক্ষতিকর।
অনুমোদনহীন উদ্ভিদজাত দ্রব্যাদি আমদানি-রপ্তানির জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদন্ড অথবা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডের বিধান করে গত ২০১১ সালের ২০ মার্চ সংসদে ‘উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ বিল ২০১১’ পাস হয়। বিলটির উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়, উদ্ভিদ ও উদ্ভিদজাত দ্রব্যাদির আন্তর্জাতিক পরিবহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ভিতরে পোকা-মাকড়, রোগবালাই অনুপ্রবেশ ও বিস্তার রোধ এবং উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ এ সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক ও সহায়ক ব্যবস্থাদির উদ্দেশ্যে ‘উদ্ভিদ সংগনিরোধ আইন ২০১১’ করা হয়েছে।
নতুন এ উদ্ভিদ সংগনিরোধ আইনে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কার্যক্রম নিয়ে আটটি এবং অপরাধ ও দন্ডসংক্রান্ত ৯টি ধারা রয়েছে। আইনের ২৬ ধারা (সরকারি অনুমোদন ছাড়াই আমদানি, প্যাকেটজাত ও বিপণন) অমান্য করলে দুই বছরের কারাদন্ডসহ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আইন বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও দেওয়া হবে বিশেষ ক্ষমতা।
ওই আইন বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের সব সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, নদীবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে প্লান্ট কোয়ারেন্টাইন সেন্টার রয়েছে। যেখান থেকে উদ্ভিদজাত দ্রব্যাদি আমদানি ও রপ্তানির জন্য ছাড়পত্র (ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট) দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলোতে দক্ষ জনবল ও গবেষণাগারের অপ্রতুলতা প্রকট। উপরন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ ফসলের ‘পেস্ট রিস্ক এনালাইসিস’ না থাকায় যথাযথ নিয়মে ছাড়পত্র ইস্যু করা যাচ্ছে না। একই কারণে ফল-ফসলের রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আবার আমদানিও থেকে যাচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ।
দেশে আইনের বাস্তব প্রয়োগ না থাকলে ইউরোপসহ উন্নত দেশগুলো এ ব্যাপারে বেশ সচেতন। বছর কয়েক আগে তাদের দেশের জন্য ক্ষতিকর জীবাণুর উপস্থিতি থাকায় বাংলাদেশ থেকে তারা লেবু ও পান আমদানি নিষিদ্ধ করে। ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি থাকায় ইউরোপের বাজারে ভারতীয় আম নিষিদ্ধ করা হয়। রাশিয়া বাংলাদেশের আলু আমদানি বন্ধ করে দেয়। উন্নত দেশগুলো ফল-ফসলের মাধ্যমে অনাকাক্সিক্ষত রোগজীবাণু, পোকামাকড় বা আগাছা অনুপ্রবেশ বিষয়ে বেশ সতর্ক। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এবিষয়ে তারা কোনো ধরনের ছাড় দিতে রাজী নয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর উপপরিচালক (রপ্তানি) কৃষিবিদ মো. সামছুল আলম বলেন, দেশে সব ফসলের পেস্ট রিক্স এনালাইসিস এর উন্নতি হয়েছে তবে পুরোপুরি নয়। এ যাবত আম, আলু, গম, পেঁয়াজ ও রসুনসহ ১৪টি ফসল এবং নিমাটোট ও মিলিব্যাগ পোকার এনালাইসিস করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রপ্তানি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিশ্বের সব দেশে থাকলেও আজও দেশে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তবে এবিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে এবং প্রস্তাবটি প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। দক্ষ জনবল ও গবেষণাগারের অপ্রতুলতা কমেনি, বরং বেড়েছে। প্রতিটি জায়গায় দক্ষ জনবল ও গবেষণাগারের সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। দেশে ৩টি সমুদ্রবন্দর, ৩টি বিমানবন্দর, ২টি নদীবন্দর ও ২২টি স্থলবন্দরে মোট ৩০টি প্লান্ট কোয়ারেন্টাইন সেন্টার রয়েছে। রেজা

সম্পাদক

নাসিমা খান মন্টি

09617175101, 01712158807

[email protected]

১৩২৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা (তৃতীয় তলা) ঢাকা ১২০৮, বাংলাদেশ। ( প্রগতির মোড় থেকে উত্তর দিকে)