সাড়া ফেলেছে পুষ্টি সমৃদ্ধ ফিস পাউডার
মতিনুজ্জামান মিটু : বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পুষ্টি ইউনিটের তত্ত¡াবধায়ন ও অর্থায়নে খাদ্যভিত্তিক পুষ্টি প্রকল্পের আওতায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ ফিস পাউডার উদ্ভাবন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ এন্ড মেরিন সাইন্স-এর প্রফেসর আব্দুল্লা আল মামুনের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী পুষ্টি সমৃদ্ধ এ পাউডার উদ্ভাবন করেন। যা ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ ফিস পাউডার প্রতিদিনকার ডাল, আলু, কচু শাক, লাল শাক, বেগুন, শিম, লাউ, চালকুমড়া, ফুল কপি, পাতা কপি ও কচুরমুখিসহ বিভিন্ন ধরণের তরকারি, ভর্তা এবং খিচুড়িতে ফিস পাউডার ব্যবহার শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের ৫ বছরের কম বয়সী শিশু, কিশোরী মেয়ে ও নারীরা সব চেয়ে বেশি পুষ্টি ঘাটতিতে ভোগেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পুষ্টি ইউনিটের পরিচালক ড. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, তৈরি করা পুষ্টি পাউডার প্রচুর পরিমাণ আয়রণ, ক্যালশিয়াম, জিংক, সেলিনিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ অন্যান্য অনুপুষ্টিতে ভরপুর। যা দেহের জন্য প্রয়োজনীয়। তাছাড়া ছোট মাছ যখন সম্পূর্ণটা মাথাসহ গ্রহণ করা হয় তখন পরিপূর্ণ পুষ্টি পাওয়া যায়।
তাই আশা করা যায়, পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত শিশু কিশোরী, নারী সদস্যরা বিভিন্ন তরকারিতে স্বল্প মাত্রায় ক্ষেত্র ভেদে ২০ থেকে ৪০ গ্রাম ফিস পাউডার ব্যবহার করে তাদের পুষ্টি ঘাটতি পুরণে সক্ষম হয়। এ পাউডারে চাপিলা মাছ ব্যবহার করা হয়েছে। সহজলভ্য ও দামে সস্তা এবং অপেক্ষাকৃত পুষ্টিমানও বেশি এ মাছে। এ মাছ ব্যবহার করে ১০০ গ্রাম পাউডার তৈরি করতে বর্তমানে ৬০ টাকা খরচ হতে পারে। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি, লক্ষীপুরের চর আলেকজান্ডার ও খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার ১২০টি পরিবারের প্রায় ৬০০ সদস্যের মাঝে সপ্তাহে জনপ্রতি ৪০ গ্রাম করে ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত এ পাউডার বিতরণ করা হয়। ইতিমধ্যে ২৪০টি পরিবারের কিশোরী মেয়েদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এ রক্তের নমুনায় আয়রন, জিংক, ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়েছে এবং ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক। আগামী মার্চ মাসে তা আবার মূল্যায়ণ করা হবে।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের একটি সূত্র জানায়, দেশে মাত্র চার ভাগের এক ভাগ লোক শরীরে চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য শক্তি পায়। এ হিসেবে দেশের ১২ কোটি মানুষ শরীরের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য শক্তি পায় না। পুষ্টি সমৃদ্ধ ফিস পাউডার দেশের এ বিশাল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি ঘাটতি মেটাতে অনেকখানি সহায়ক হবে। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও, রেজা