আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার চুক্তি অনুসমর্থন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং এ সম্পর্কিত গবেষণা কাজে প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহায়তা পেতে আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট (আইভিআই) প্রতিষ্ঠার চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার বিষয়ে আগামী চার-পাঁচদিনের মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আগে শিক্ষক-কর্মচারিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন মন্ত্রিসভায় ‘বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন-২০২১’ ও ‘বাংলাদেশ শিল্প নকশা আইন ২০২১’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভস আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন, আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটের মধ্যে চুক্তির অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে স্বাক্ষরের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত সংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয় মন্ত্রিসভায়।
এ ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাদুঘর ও নয়াদিল্লিস্থ জাদুঘরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয় বলেও জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ২৮ অক্টোবর ইউনাইটেড ন্যাশন ডেভেলপমেন্টের প্রোগ্রামের উদ্যোগে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে একটা আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটের চুক্তি হয়েছিল, সেখানে আমরা স্বাক্ষর করি। কিন্তু এটার পূর্ণ্য সদস্যের জন্য আমাদের কেবিনেটের অনুমোদনের দরকার, সেজন্য এ প্রস্তাব তোলা হয়েছে। এটা যদি আমরা করি, তাহলে আমাদের দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং এ সম্পর্কিত গবেষণা কাজে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা পাওয়া যাবে। এতে দেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থাগুলোর সক্ষমতাও বাড়বে। ভ্যাকসিন উৎপাদন প্রয়োগ ও মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও যুগোপযোগী হবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশে নতুন ভ্যাকসিন উৎপাদন আরও সহজতর হবে। ফলে দেশে স্বল্পমূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। আর ভ্যাকসিনের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যোগ্যতা অর্জনের পথও আমাদের সুগম হবে, যা বিদেশে বাংলাদেশের ভ্যাকসিনের বাজার স¤প্রসারণে সহায়ক হবে। আমাদের যেহেতু ফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদন ও মান মোটামুটি মানসম্মত, যা বিশ্বে প্রমাণিত। সুতরাং এক্ষেত্রে আমরা আশা করছি, খুব শিগগিরই বা দ্রæত এগুলো অর্জন করতে পারবো। বিশেষ করে বর্তমান অবস্থার পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আরও বেশি প্রয়োজন বলে অনুভূত হয়েছে।’ আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠান গেøাব বায়োটেক ভ্যাকসিন তৈরি করছে ও বাজারজাত করতে চাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গেøাব বায়োটেক এখনও তো ট্রায়াল শেষ করেনি। এ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে কেবিনেটে। তারা যদি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল মেনে করতে পারে, তাহলে তারা ট্রায়াল করবে তারপর দেখা যাবে।’
এ চুক্তি না থাকায় কোনো সমস্যা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না না এতে কোনো সমস্যা হবে না। ধরেন ফাইজারের সঙ্গে যদি কেউ চুক্তি করে, অরিজিনাল চুক্তি তো ফাইজারের। এখন ফাইজার যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে, তাদের সব প্রোটকল অনুযায়ী, তাহলে আমাদের আর চুক্তি লাগবে না। তবে নতুন করে বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান যেমন বায়োটেক যদি কোনো প্রোডাক্ট এখান থেকে প্রোডিউস করতে চায় তাহলে আমাদের চুক্তির অধীনে শর্ত মানতে হবে।’ সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও, রেজা