স্বেচ্ছা ঋণ খেলাপিদের জন্য কঠোর হচ্ছে আইন, সংজ্ঞা নিয়ে মতভেদ
সোহেল রহমান : স্বেচ্ছা ঋণ খেলাপিদের সংজ্ঞা নির্ধারণসহ তাদের আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে সংশোধিতব্য ব্যাংক কোম্পানি আইনে। প্রস্তাব অনুযায়ী, আর্থিক সামর্থ্য থাকা সত্তে¡ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক কোনো ব্যাংক থেকে গৃহীত ঋণ ও এর সুদ পরিশোধ না-করা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবে। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাবিত স্বেচ্ছা খেলাপির সংজ্ঞার বিষয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি জানিয়েছে ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস’ (বিএবি)। অন্যদিকে বিভিন্ন মতামতের আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তাবিত স্বেচ্ছা খেলাপির সংজ্ঞা পরিমার্জন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। সংশোধিত খসড়া আইনটি বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ‘আইনের খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত কমিটি’-তে রয়েছে। সেখান থেকে খসড়াটি চূড়ান্ত হয়ে আসার পর তা মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যমান আইনে স্বেচ্ছা খেলাপিদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত না-করায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। এ কারণে সংশোধিতব্য ব্যাংক কোম্পানি আইনে নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আইনটির একটি প্রাথমিক খসড়া প্রণয়ন করেছে। কিন্তু এটি পরিমার্জন ও চূড়ান্ত করার এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের। বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত মতামতের আলোকে মন্ত্রণালয় একটি চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করেছে।
সূত্রমতে, স্বেচ্ছা ঋণ খেলাপির সংজ্ঞা নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাবিত সংজ্ঞায় চারটি উপধারা রাখা হয়েছিল। এটি কাটছাঁট করে দুটি উপধারায় সংজ্ঞায়িত করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাবে বলা হয়েছিলÑ ‘স্বেচ্ছাকৃত/ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা অর্থ এরূপ কোন খেলাপি দেনাদার ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী যে নিজের বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুক‚লে প্রদত্ত অগ্রিম, ঋণ বা অন্য কোন আর্থিক সুবিধা বা উহার অংশ বা উহার উপর অর্জিত সুদ বা উহার মুনাফা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী যদিÑ (১) তাহার ঋণ পরিশোধ করিবার জন্য আর্থিক সচ্ছলতা বা সামর্থ্য থাকা সত্তে¡ও ঋণ পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হন, বা (২) জাল-জালিয়াতি বা প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে অস্তিত্ববিহীন কোন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর নামে ঋণ গ্রহণ করিলে, বা (৩) তাহাকে যে উদ্দেশ্যে ঋণ প্রদান করা হইয়াছিল সেই উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করিয়া ঋণের অর্থ অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করিলে অথবা স্থানান্তর করিলে, বা (৪) ঋণ বা অগ্রিমের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক-কোম্পানীর অজ্ঞাতে হস্তান্তর বা স্থানান্তর করেন।’
সংজ্ঞার বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সুপারিশকৃত আইনে বলা হয়েছে, ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা অর্থ এরূপ খেলাপি ঋণগ্রহীতা’ যিনি-(১) নিজের বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুক‚লে গৃহীত অথবা বেনামে বা অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর নামে গৃহীত ঋণ বা বিনিয়োগ বা অন্য কোন আর্থিক সুবিধা বা উহার অংশ বা উহার সুদ বা মুনাফা তাহার সামর্থ্য থাকা সত্তে¡ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী পরিশোধ না করেন; বা (২) ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত ঋণ প্রদানকারী এরপর পৃষ্ঠা ২, সারি ১