আমার দেশ • প্রথম পাতা • মিনি কলাম • শেষ পাতা
‘আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তেল গ্যাসের দামের সামঞ্জস্য থাকা দরকার’
মাসুদ হাসান : আন্তর্জাতিকভাবে কিছু দেশের কূটনৈতিক ইস্যুর কারণে তেল-গ্যাসের দাম বৃদ্ধি হয়ে থাকে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। গ্যাস ও তেল জাতীয় ভোগ্যপণ্যের হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ার বড় কারণ হলো ব্রিটেন থেকে যে খনিজ সম্পদ পাইপ দিয়ে আমেরিকায় যেতো সে ব্যবস্থা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। তার প্রভাবে খনিজ তেল-গ্যাসের বাজারে পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। এগুলোর সঙ্গে আমেরিকার ফ্যাক্টিংয়ের কিছু যোগসাজস্য রয়েছে, আমেরিকা এক সময় মধ্যপ্রাচ্যের তেলের ওপর নির্ভর ছিলো। আমেরিকা যখন ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলো সেটা খনিজ তেলÑ গ্যাসের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য। আমেরিকা ফ্যাক্টিং করে বালি থেকে তেল বের করে তারা স্বংয়সম্পূর্ণ হয়েছিলো, আবার ব্রিটেন যখন ক্ষমতায় আসে, ব্রিটেন ফ্যাক্টিংয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। পরিবেশ নিয়ে যারা কাজ করে তারা পরোপুরিভাবে ফ্যাক্টিংয়ের বিরুদ্ধে। সেজন্য অনেকগুলো বিষয় কাজ করছে তেল-গ্যাস মূল্য বৃদ্ধিতে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি আরও বলেন, তেল-গ্যাসের দাম বাড়ানো-কমানো আন্তর্জাতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, যার প্রভাবে আমাদের দেশীয় বাজারে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসের দাম বাড়ানোর সঙ্গে আমাদের দেশের একটা বড় পার্থক্য দেখা যায়, সেটা যৌক্তিসঙ্গত কিনা দেখতে হবে। যারা এগুলো আমদানি করে সেসব বেসরকারি কোম্পনিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সরকারের দায়িত্ব। কারণ সিলিন্ডারে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বৃদ্ধি হলে নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে। যাদের মাসে দুটি সিলিন্ডার লাগে ২০০ থেকে ২৫০ করে বাড়তি টাকা গুণতে হবে তাদের। এটা নিম্নবিত্ত মানুষের পক্ষে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। দেশে সরকার সব সয়ম পেট্রোলিয়ামপণ্যে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। সরকারেরও ভর্তুকি দেওয়ার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবসায়ীদের মধ্যে একধরনের যোগসাজস থাকে, তারা নিজেদের ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে থাকে। সে বিষয়টিতে জনগণের স্বার্থে সরকারের নজর দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
করোনার মহামারিতে এমনিতেই নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের হাতে যেন সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে না পরে। দেশে যেহেতু পাইপলাইনের মাধ্যমে উৎপাদানকারী দেশ থেকে তেল-গ্যাস আনার ব্যবস্থা নেই। ফলে করোনার কারণে পরিবহন খরচ একটু বাড়তেই পারে ব্যবসায়ীদের এই কথায় কিছু যৌক্তিকতা থাকতেই পারে। কারণ বিভিন্ন বন্দরে আগের মতো কার্যক্রম নেই। সেটার জন্যও ব্যবসায়ীদের বাড়তি কিছু খরচ যোগ হচ্ছে, সেটা অস্বাভাবিক নয়, কিন্তু সেটার জন্য দামের পার্থক্য বেশি হবে না।