‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে’
ভূঁইয়া আশিক রহমান : রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির বলেছেন, সার্বিকভাবে আমাদের অর্থনীতির অবস্থা বেশ ভালো। কারণ এই করোনাকালেও ব্যবসা-বাণিজ্য, রেমিটেন্স প্রবাহ অন্য দেশের তুলনায় অনেক ইতিবাচক ছিলো, সেই ধারাটা এখনো অব্যাহত আছে। মহামারির মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স এসেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ধরনের সংকট আসেনি। ফলে এ নিয়ে ভাবতে না হলেও খাদ্য ও কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা করতে হবে। করোনা পরিস্থিতি যেন কোনো অবস্থাতেই খারাপ না হয়। কারণ পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে স্বাভাবিকভাবেই অর্থনীতির ওপর কমবেশি আঘাত আসবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির ফাউন্ডেশনটা অনেক মজবুত। তবে খাদ্যে নিরাপত্তায় আমাদের পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে, কোনোভাবেই যেন খাদ্যের ঘাটতি না হয়। বোরো ফসলটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ফসলটা যদি আমরা ঠিকঠাকমতো ঘরে তুলতে পারি, তাহলে খাদ্যের সংকট হবে না। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টির যে পূর্ভাবাস, সেগুলো আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে।
ড. আহমদ আল কবির বলেন, আমাদের অর্থনীতির জন্য এখন দক্ষজনশক্তি তৈরি করার কাজটি আরও গতিশীল করতে হবে। আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন খুব ভালোভাবে এগোচ্ছে। পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দর, মিরের সরাইয়ের মতো বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো আমাদের প্রত্যাশা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থনীতির আগামী দিন খুব ভালোই দেখছি। পাশাপাশি আমাদের অন্য বিষয়গুলোর দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারলে দেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। দেশে নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে, কিন্তু জনসংখ্যা বিবেচনায় যে গতিতে বিনিয়োগ হওয়া দরকার, সেই গতিতে হচ্ছে না। নতুন অনেক তরুণ কর্মক্ষম হয়ে শ্রমবাজারে ঢুকছে, তাদের সাফিসিয়েন্ট জব তৈরি হচ্ছে না। এ সংকট সমাধানে আমাদের কৃষিভিত্তিক বা সেলফ অ্যাম্পøয়মেন্ট ক্রিয়েশনের জন্য ব্যাপকভাবে কর্মসূচি নিতে হবে। সেলফ অ্যাম্পøয়মেন্ট খুবই প্রয়োজন। নিজেরা যদি সেলফ অ্যাম্পøয়মেন্টের দিকে যাওয়ার চিন্তা করে, যুবসমাজকে যদি আমরা উদ্বুদ্ধ করতে পারি, তারা ব্যবসা করবে, বিনিয়োগ করবে কর্মবান্ধব শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষতাবান্ধব শিক্ষা নিয়ে দেশ-বিদেশে কাজ করবে।
চাকরি কখনো আনলিমিটেড হবে না। একদিকে টেকনোলজি আর নতুন চাকরির সুযোগÑ দুটিই একে অপরের পরিপূরক নয়। আমরা টেকনোলজি চাই, একইসঙ্গে সবার জন্য কমংস্থানও চাই। এখানে উদ্যোক্তাই একমাত্র বিকল্প। চাকরিকে প্রাধান্য না দিয়ে উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দিতে হবে। নতুন নতুন কর্মবান্ধব শিক্ষার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা যেন গড়ে ওঠে, উদ্যমীদের সহায়তা করতে হবে।
এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, করোনাকালীন প্রণোদনাগুলোর সুবিধা বড় উদ্যোক্তারাই পাচ্ছেন। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কীভাবে প্রণোদনা প্যাকেজের সঙ্গে যুক্ত করা যায়, সুযোগ করে দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবা উচিত।