মুজিব সম্পর্কে আহমদ ছফা
মোরশেদ শফিউল হাসান : ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং শেখ মুজিবুর রহমান এ দুটো যমজ শব্দ একটা আরেকটার পরিপূরক এবং দুটো মিলে আমাদের জাতীয় ইতিহাসের উজ্জ্বল-প্রোজ্জ্বল এক অচিন্তিতপূর্ব কালান্তরের সূচনা করেছে।’ [‘শেখ মুজিবুর রহমান’ (১৯৮৪), শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য প্রবন্ধ, ১৯৮৯]
‘বস্তুত বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্য গীতাঞ্জলী নয়, বলাকা নয়, সোনার তরী নয়। ‘আর দাবায়ে রাখবার পারবা না’।” [‘শেখ মুজিবুর রহমান’ (১৯৮৪), শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য প্রবন্ধ, ১৯৮৯]। ‘আজ থেকে অনেকদিন পরে হয়তো কোনো পিতা তার শিশুপুত্রকে বলবেন, ‘জানো, খোকা! আমাদের দেশে একজন মানুষ জন্ম নিয়েছিলেন যার দৃঢ়তা ছিল, তেজ ছিল আর ছিল অসংখ্য দুর্বলতা। কিন্তু মানুষটির হৃদয় ছিল, ভালোবাসতে জানতেন। দিবসের উজ্জ্বল সূর্যালোকে যে বস্তু চিক চিক করে জ্বলে তা হলো মানুষটির সাহস। আর জ্যোস্নারাতে রূপালী কিরণধারায় মায়ের স্নেহের মতো যে বস্তু আমাদের অন্তরে শান্তি ও নিশ্চয়তার বোধ জাগিয়ে তোলে তা হলো তার ভালোবাসা। জানো খোকা তার নাম? শেখ মুজিবুর রহমান।’ [‘তাঁর নাম শেখ মুজিবুর রহমান’, শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য প্রবন্ধ, ১৯৮৯]
মুজিব সম্পর্কে আহমদ ছফার উপরিউক্ত মূল্যায়ন প্রসঙ্গে ছফার মৃত্যুর অব্যবহিত পরে আমি লিখেছিলাম, ‘ময়ের অনুক‚ল স্রোতের মুখে বঙ্গবন্ধু-বন্দনা করে সা¤প্রতিককালে আমাদের লেখকেরা অনেকেই অনেক কিছু লিখেছেন। ইতোমধ্যে মুজিবকে নিয়ে রাশি-রাশি বই, প্রবন্ধ ও কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু বোধের দীপ্তিতে উজ্জ্বল এমন কাব্যিক ব্যঞ্জনাময় পঙক্তি তাঁদের কজনের কলম থেকে বেরিয়ে এসেছে? … গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও ইতিহাসবোধ থাকলেই কেবল এমন বাক্য রচনা করা যায়, স্রেফ স্তুতির জন্য যার প্রয়োজন হয় না।’ [ছফা ভাই : আমার দেখা আমার চেনা, ২০০২, পৃ.৩৫] ভুল কিছু বলেছিলাম কী? ফেসবুক থেকে