‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবে না’
শাহিন হাওলাদার : এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, জীবনের সঙ্গে জীবিকার গুরুত্ব অপরিসীম। একটি বাদ দিয়ে অন্যটি কল্পনা করা যায় না। তবে জীবন প্রথম তারপরে জীবিকা। আলাদাভাবে কোনোটি বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। মানুষকে বাঁচার জন্য যা করার দরকার তা করতে হবে। অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য নতুন নতুন পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশ গত এক বছরে নিপুণভাবে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো মোকাবেলা করেছে। নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কিছু বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে। করোনাভাইরাসের শুরুর দিকে যেসব বিধি-নিষেধ ছিলো সেগুলো মুখে না বলে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, জীবনের তাগিদে সম্মিলিতভাবে সচেতনতার সঙ্গে আমাদের এবিষয়গুলো মেনে চলতে হবে। অন্যদিকে জীবিকার তাগিদে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রামীণ অর্থনীতিকে চালু রাখতে হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শুধু শহরের অর্থনীতি নয়, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে সচল রাখতে হবে। কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনীতিকে সমৃদ্ধি করার সুযোগ অনেকি বেশি। গ্রামে করোনার প্রাদুর্ভাব কম কিন্তু তাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমাতা বেশি। গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষদের উৎসাহিত করতে হবে। কৃষি বলতে শুধু ধান-চাল নয়, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল, মৎস্য চাষী সবাইকে বোঝায়। কৃষকদের সাহায্য-সহযোগিতা করে উৎপাদন সচল রাখতে পারলে আগের মতোই করোনাভাইরাস বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর তেমন প্রভাব ফেলতে পারবে না।
বাংলাদেশে যেসব মেগা-প্রকল্প চলমান আছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেলসহ মেট্রোরেল প্রকল্পে যারা কাজ করে তাদের আইসোলেশনে রেখে কাজ চালিযে যেতে হবে। তাদের ওপর বিশেষ নজর রাখতে হবে। কারণ এসব প্রকল্পে দেশি-বিদেশি অনেক শ্রমিক একসঙ্গে কাজ করে। সমাজে অন্যান্য ক্ষেত্রে যারা কাজ করে তাদের মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বাধ্য করতে হবে। রাজনৈতিক জনসভাসহ ব্যাপক জনসমাগম হয় এমন কর্মসূচি পরিহার করতে হবে। এমনকি খেলা-ধুলার আয়োজনগুলোও সীমিত করতে হবে। এগুলো মেনে চলতে পারলে একদিকে আমাদের অর্থনীতি সচল থাকবে, অন্যদিকে জীবনেরও নিরাপত্তা থাকবে। গত এক বছরে বাংলাদেশ যেভাবে করোনা মোকাবেলা করেছে, সেটা ধরে রেখে আগামি বছর ৫-৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রাখতে পারলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে।