ভাসমান চাষাবাদ পদ্ধতি জলবায়ু পরিবর্তনের স্থিতিশীল সমাধান
লিহান লিমা : গবেষণায় বলা হয়েছে, ভাসমান চাষাবাদ পদ্ধতি শুধুমাত্র প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবসাসরত গোষ্ঠির আয়ের অন্যতম একটি উৎসই নয়, বন্যাদুর্গত এ দেশে স্থিতিশীল খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে অন্যতম একটি কার্যকরী পদক্ষেপ। ইউরো অ্যালার্ট
‘জার্নাল অব এগ্রিকালচার, ফুড অ্যান্ড এনভারমেন্ট’ এ প্রকাশিত এ গবেষণাপত্রে কি ধরনের ভাসমান বাগান পদ্ধতি বাংলাদেশের কৃষি ও চাষাবাদের জন্য স্থিতিশীল হবে তা বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষকরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই ভাসমান পদ্ধতি খাদ্য উৎপাদনে কতটুকু স্থিতিশীল তাও খতিয়ে দেখেন।
গবেষণার সহ-লেখক ওহাইও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রেগ জেনকিনস বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকের উৎপাদন অব্যাহত রাখার চালিকাশক্তি এই ভাসমান প্রকল্প।’ গবেষকদল এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা ৯ জন কৃষকের সাক্ষাৎকার নেন। প্রত্যেকেই বলেছেন, এই পদ্ধতি সার, কীটনাশক ও রাসায়নিক ব্যবহারের বাড়তি খরচ সম্পূর্ণ কমিয়ে দেয়। একজন বলেছেন, জমিতে ধানচাষের সনাতন পদ্ধতির চেয়ে এই পদ্ধতিতে তিনি চারগুণ বেশি আয় করেছেন।
এই সময় গবেষকরা এই পদ্ধতির সম্প্রসারণের জন্য কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়ার আহ্বান জানায়। যাতে তারা সহজেই ‘ভাসমান বাগান’ তৈরি করতে পারে।
সাধারণত জলে ভেসে থাকতে সক্ষম এমন উদ্ভিদ (কচুরিপানা) দিয়ে এটি তৈরি করা হয়, পানির সাথে পাল্লা দিয়ে ভেসে থাকে এই ভাসমান চাষের জমি। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষা মৌসুম থাকায় এই সময় এমন ভাসমান উদ্যান চাষাবাদ পদ্ধতি খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী। বাংলাদেশে ‘ভাসমান চাষাবাদ’ পদ্ধতিটি কিছুটা নতুন হলেও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো শতবছর ধরে এই পদ্ধতি চলে আসছে। এই পদ্ধতিকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ‘কৃষি ঐতিহ্যের বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও