গ্রামের চেয়ে শহরে অটিজম আক্রান্তের হার বেশি
শাহীন খন্দকার : বিএসএমএমইউর পেডিয়াট্রিক অনুষদের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিন ও ইপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহীন আখতার আর বলেন, শিশুদের অটিজম শনাক্তকরণ থেকে সাইকোলজিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট, থেরাপি এবং ম্যানেজমেন্ট সকল সেবাই প্রদান করা হয় ইপনাতে। বিশেষ শিশুদের অভিভাবকদের জন্য রয়েছে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। ৩ থেকে ১৪ বছর বয়সি এসব শিশুদের জন্য বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করে লেখাপড়া শেখানোর পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রা সহজ করার উপায়গুলো শেখানো হয়। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এই অনলাইন ক্লাস, যা অব্যাহত রয়েছে।
সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও ২ এপ্রিল পালিত হচ্ছে ১৪তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। চলতি বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মহামারী-উত্তর বিশ্বে ঝুঁকি প্রশমন, কর্মক্ষেত্রে সুযোগ হবে প্রসারণ’। দিবসটি উপলক্ষ্যে আগামী ৫ এপ্রিল চিকিৎসক, সাইকোলজিস্ট এবং থেরাপিস্টদের নিয়ে এক ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে ইপনা। সেই সঙ্গে আগামী ৮ এপ্রিল অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকদের নিয়ে অনলাইনে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এছাড়া বিএসএমএমইউর বিভিন্ন ভবনে আজ শুক্রবার নীল বাতি প্রজ্বালন করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অটিজম কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। অনেকে অটিজমকে মানসিক রোগ মনে করলেও চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে মস্তিষ্কের অসম্পূর্ণ বিকাশের কারণে এটি হয়ে থাকে। এটি মূলত এক ধরনের স্নায়বিক বিকাশজনিত রোগের শ্রেণী, যা সামাজিক বিকলতা, কথা বলার প্রতিবন্ধকতা এবং পুনরাবৃত্তিমূলক ও একই ধরনের আচরণ দ্বারা চিহ্নিত হয়।
অটিজম শব্দটি আমাদের দেশে একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে যতটা পরিচিত, ঠিক ততটাই অপরিচিত সামাজিক ক্ষেত্রে। এমনকি অটিস্টিক শিশু আছে এমন পরিবারও অনেক ক্ষেত্রে বিষয়টি জানে না। তারা আরো বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর জন্য কেবল মাকে নয়,বাবাকেও কোয়ালিটি সময় দিতে হবে।
জিমনেসিয়াম, সুইমিং পুলে সপ্তাহে অন্তত একদিন বিশেষ শিশুদের জন্য সুযোগ রাখা প্রয়োজন। অভিভাবকদের কাউন্সিলিং দরকার। কারণ এই শিশুদের অভিভাবকরা ভালো থাকলে তাদের সন্তানটিও ভালো থাকবে।
এদিকে বাংলাদেশে দেড় লাখের মতো অটিজম আক্রান্ত মানুষ রয়েছে। প্রতিবছর এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরও প্রায় ১৫শ শিশু, গড়ে প্রতিদিন চারজনের বেশি। এক গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামে প্রতি হাজারে ১.৪ জন, কিন্তু শহরে ২.৫ জন অটিজম আক্রান্ত। মেয়ে শিশুর চেয়ে ছেলে শিশুর মধ্যে অটিজমে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আড়াই গুণ বেশি। দেশে ১৬ থেকে ৩০ মাস বয়সি শিশুদের মধ্যে অটিজম বিস্তারের হার প্রতি হাজারে ১ দশমিক ৭ জন। অটিজম বিষয়ে আমাদের দেশে সরকারি উদ্যোগ কম নয়।