আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৩
আগামী বাজেটে রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি বড় ধরনের চাপে পড়ার শঙ্কা
সোহেল রহমান : বিশ্বে করোনা পরিস্থিতি নতুন করে বাড়তে থাকায় আগামী বাজেটে রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি বড় ধরনের চাপে পড়তে পারে। আগামী নতুন বাজেটে বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এটি জিডিপি’র ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে রাজস্ব আদায়ের এ লক্ষ্যমাত্রা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে সরকার। একদিকে করোনার ক্ষতি থেকে বাঁচাতে হবে মানুষকে, অন্যদিকে ধরে রাখতে হবে উন্নয়নের ধারা।
প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথমবারের মত রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরেও রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে আগের অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আদায় বাড়লেও নির্ধারিত সময়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। আলোচ্য সময়ে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৯৬ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এটি গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় ৪ দশমিক ০৫ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এমতাবস্থায় রাজস্ব আদায়ের বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে চলতি মার্চসহ আগামী চার মাসে এনবিআর-কে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে হবে। যা আট মাসের আদায়ের তুলনায় প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা বেশি।
অর্থ বিভাগ সূত্রমতে, করোনা পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগামী বাজেটে ৯টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। এগুলো হচ্ছেÑ করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলোতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা; কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলো বাস্তবায়ন করা; কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যখাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা এবং ক্ষতিপূরণ দেয়া; অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সেচ ও বীজ প্রণোদনা দেওয়া, কৃষি পুনর্বাসন, সারে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখা; ব্যাপক কর্মসৃজন ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা; সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা বাড়ানো; গৃহহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহনির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা; নি¤œ আয়ের মানুষের মাঝে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা চালু রাখা এবং শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়ন করা।
জানা যায়, আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে মূল বাজেটের প্রাথমিক আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। এটি নতুন অর্থবছরের প্রাক্কলিত নতুন জিডিপি’র ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ। নতুন জিডিপি’র আকার ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে সার্বিক ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। এটি প্রাক্কলিত নতুন জিডিপি’র ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। সার্বিক ঘাটতির মধ্যে ১ লাখ ৪২ হাজার ১১১ কোটি টাকা (প্রাক্কলিত নতুন জিডিপি’র ৪ শতাংশ) অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং অবশিষ্ট ৬৭ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা (প্রাক্কলিত নতুন জিডিপি’র ১ দশমিক ৯ শতাংশ) বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান থেকে পূরণ করা হবে। চলতি অর্থবছরে সার্বিক বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি জিডিপি’র ৬ শতাংশ।
সূত্রমতে, আগামী বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের মূল বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে এটি কমিয়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি মোট বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা জিডিপি’র ৩২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে প্রস্তাবিত নতুন জিডিপি’র ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বেসরকারি বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে প্রস্তাবিত নতুন জিডিপি’র ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ হচ্ছে যথাক্রমে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা এবং ৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে শিল্প কারখানা খোলা থাকবে(প্রথম পৃষ্ঠার পর) সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি ২২৬টি আরটি-পিসিআর, জিন এক্সপার্ট ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৩০ হাজার ২৯৩টি। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৩৩৯টি। একদিনে এর আগে এত বেশি নমুনা কোনোদিন পরীক্ষা করা হয়নি। সূত্র: সারাবাংলা, বাংলানিউজ, বাংলাট্রিবিউন।